বরিশাল মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. লিটন শিকদার ওরফে লিটু (৩২) বিমানবন্দর থানার পুলিশের উপস্থিতিতে খুন হয়েছেন বলে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন তার বোন ও মামলার বাদী মুন্নি আক্তার। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বরিশাল প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। মুন্নি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায্য বিচারের জন্য সিআইডির মাধ্যমে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
মুন্নি আক্তার জানান, গত ৩১ জুলাই বরিশালের কাশিপুর ইউনিয়নের পূর্ব বিল্ববাড়ি এলাকায় পুলিশ তদন্তের কথা বলে তাদের বাড়িতে যায় এবং লিটুকে ঘটনাস্থলে ডেকে আনে। কিন্তু পুলিশের সামনেই তার দায়ের করা মামলার আসামি ও তাদের সহযোগীরা লিটুকে ছিনিয়ে নিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় হামলাকারীরা বসতঘর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগও করে।
“লিটুকে বাঁচাতে গিয়ে আমি, আমার ভাই এবং মা মারাত্মকভাবে আহত হই। আমার একটি পা, ভাইয়ের একটি হাত এবং মায়ের তিনটি আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এখন আমরা সবাই শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী,” বলেন মুন্নি আক্তার। তিনি অভিযোগ করেন, বিমানবন্দর থানা পুলিশ ঘটনার দিন দায়িত্বহীন ও প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা পালন করেছে। তারা ঘটনাস্থলে থাকলেও কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে চলে যায় এবং পরে আসামিদের পক্ষে কাজ করেছে বলেও দাবি করেন তিনি।
মুন্নি আরও জানান, লিটু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তিনি ৬১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ১৫০-২০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। তবে অনেক আসামি এখনও গ্রেপ্তার হয়নি। কিছু আসামি জামিনে এসে তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। এ কারণে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে তারা এলাকা ছেড়ে অন্যত্র বসবাস করছেন।
“যদি পুলিশ সেদিন তাদের দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করতো, তাহলে লিটুকে খুন করা সম্ভব হতো না। বরং এখনও থানা পুলিশ কূটকৌশলে আসামিদের পক্ষে কাজ করছে,” বলেন মুন্নি। তিনি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায্য বিচারের জন্য সিআইডির মাধ্যমে তদন্তের দাবি জানান এবং সাংবাদিকদের সরেজমিনে গিয়ে ঘটনার প্রকৃত চিত্র তুলে ধরার অনুরোধ করেন।
উল্লেখ্য, নিহত লিটু ও মুন্নি মূলত ভোলা জেলার বাসিন্দা হলেও দীর্ঘদিন ধরে বরিশালের কাশিপুর বিল্ববাড়ি এলাকায় বসবাস করে আসছেন।

স্টাফ রিপোর্টার :
প্রকাশের সময়: মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৫ । ৬:৩৫ অপরাহ্ণ