সংবাদ প্রকাশের পরে ন্যায়কুঞ্জ থেকে খাবার হোটেল উচ্ছেদ

স্টাফ রিপোর্টার :
প্রকাশের সময়: মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৫ । ৬:২৪ অপরাহ্ণ

বরিশাল আদালত প্রাঙ্গণে ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত বিচারপ্রার্থীদের বিশ্রামাগার ‘ন্যায়কুঞ্জ’ থেকে অবৈধভাবে পরিচালিত একটি খাবার হোটেল উচ্ছেদ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে প্রধান বিচারপতির নির্দেশে বরিশালের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহির উদ্দিন ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদুর রহমানের নেতৃত্বে এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়।

অভিযানে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবুল কালাম আজাদ, বরিশাল আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মির্জা রিয়াজ হোসেন, বরিশাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পিপি হাফিজ আহমেদ খান বাবলুসহ আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আইনজীবী সমিতির সদস্যরা।

৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ন্যায়কুঞ্জ গত বছর ৭ মার্চ বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরীর উদ্বোধনের মাধ্যমে চালু হয়। ৮০০ বর্গফুটের এই বিশ্রামাগারে ৪০ জন বিচারপ্রার্থীর বসার স্থান, পুরুষ ও মহিলাদের জন্য পৃথক বাথরুম, ব্রেস্টফিডিং জোন এবং বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও একটি ছোট টি স্টলের ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু সম্প্রতি এটি একটি খাবার হোটেল হিসেবে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছিল, যার ফলে বিচারপ্রার্থীরা বিশ্রামাগারটি ব্যবহারের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন।

৭ অক্টোবর দৈনিক আজকের বার্তা পত্রিকায় এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে প্রধান বিচারপতির নজরে আসে। তিনি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন, যার পরিপ্রেক্ষিতে এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়।

আদালতের একাধিক কর্মকর্তা জানান, “ন্যায়কুঞ্জ বিচারপ্রার্থীদের জন্য একটি সরকারি বিশ্রামাগার। এখানে কোনো বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালানো বেআইনি। প্রধান বিচারপতির নির্দেশে অবৈধভাবে পরিচালিত হোটেলটি উচ্ছেদ করা হয়েছে।”

বরিশাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পিপি হাফিজ আহমেদ খান বাবলু বলেন, “ন্যায়কুঞ্জ আদালত চত্বরে বিচারপ্রার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো। অবৈধ দখলমুক্ত হওয়ার ফলে এটি এখন প্রকৃত উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হবে।”

বরিশালের ১০টি উপজেলায় প্রায় ৫০ হাজার মামলা বিচারাধীন রয়েছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ন্যায়বিচারের আশায় আদালতে ছুটে আসেন। দূর-দূরান্ত থেকে আগত বিচারপ্রার্থীদের জন্য বসার স্থান, নারীদের বিশ্রামাগার, টয়লেট এবং শিশুদের জন্য দুগ্ধপানের স্থানের অভাব ছিল। এই সমস্যা সমাধানে ন্যায়কুঞ্জ নির্মাণ করা হয়েছিল।

ন্যায়কুঞ্জের মূল উদ্দেশ্য ছিল বিচারপ্রার্থীদের জন্য বিশ্রাম, ছায়া এবং বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। কিন্তু বাণিজ্যিক ব্যবহারের কারণে এর উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছিল, যা নিয়ে বিচারপ্রার্থীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষোভ ছিল।

উচ্ছেদ অভিযানের ফলে ন্যায়কুঞ্জ এখন তার প্রকৃত উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত। আদালত সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, এই পদক্ষেপ বিচারপ্রার্থীদের জন্য স্বস্তি নিয়ে আসবে এবং ন্যায়কুঞ্জ তার মূল লক্ষ্য পূরণে সক্ষম হবে।

 

প্রকাশক ও সম্পাদক: মেহেরুন্নেছা বেগম।  কপিরাইট © ২০২৫ দৈনিক আজকের বার্তা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

প্রিন্ট করুন