টাইফয়েড টিকা নিতে চার ধাপের প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। প্রথমে অনলাইনে নিবন্ধন, দ্বিতীয় ধাপে টিসিভি কর্মসূচিতে নিবন্ধন, তৃতীয় ধাপে টিকাদান কার্ড ডাউনলোড এবং চতুর্থ ধাপে নির্ধারিত কেন্দ্রে গিয়ে সেই কার্ড দেখিয়ে টিকা গ্রহণ করতে হবে। সাধারণ মানুষের কাছে এ প্রক্রিয়াটি জটিল মনে হচ্ছে। অথচ টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন–২০২৫-এ এই পদ্ধতিতেই প্রচারণা চলছে।
অভিভাবকেরা বলছেন, প্রক্রিয়াটি সহজ না হলে অনেক শিশু বাদ পড়বে এ ক্যাম্পেইন থেকে। ভ্যাক্সইপিআই ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যায়, নিবন্ধনের সময় জন্মতারিখ, জন্মনিবন্ধন নম্বর, লিঙ্গ ও ক্যাপচা কোড পূরণ করতে হয়। জন্মতারিখ ছাড়া বাকি সব ঘর বাধ্যতামূলক। ফলে যাদের জন্মনিবন্ধন সনদ নেই, তারা নিবন্ধন করতে পারছেন না।
ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শাহীনুর ইসলাম বলেন, ‘আমার সন্তানের জন্মসনদ নেই, তাই টিকার জন্য নিবন্ধন করা যাচ্ছে না। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জোগাড় করা এই অল্প সময়ে সম্ভব নয়। আমি শিক্ষিত হয়েও যখন পারছি না, তখন বস্তি বা গ্রামের শিশুরা কিভাবে পারবে?’
মিরপুরের বাসিন্দা তন্ময় রহমান জানান, নিবন্ধনের সময় সন্তানের স্কুল খুঁজে পাওয়া কঠিন। তিনি বলেন, ‘স্কুল থেকে নিবন্ধন করতে বলা হয়েছিল, কিন্তু ভ্যাক্সইপিআই ওয়েবসাইটে স্কুলের নাম পাইনি।
পরে মিরপুর এলাকার নাম দিয়েই করেছি। দেখি এখন দেওয়া যায় কি না।’
তিনি আরো বলেন, আমার এক আত্মীয় গ্রামে থাকেন। তার দুই সন্তান। তাদের জন্য নিবন্ধন করতে পারছেন না।
আমাকে বলেছেন করে দিতে। আমি না হয় তাদেরটা করে দিলাম। কিন্তু অন্য সবাই কী করবে? কোথায় গিয়ে নিবন্ধন করবে? আবার কোথায় গিয়ে নিবন্ধন কার্ড প্রিন্ট করাবে? প্রক্রিয়াটি জটিল হয়ে গেছে।
তবে আজ টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন-২০২৫-এর জাতীয় অ্যাডভোকেসি সভায় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম জানিয়েছেন, জন্মসনদ থাকুক বা না থাকুক, প্রতিটি শিশুকে টিকা দিতে হবে। তিনি বলেছেন, ‘টাইফয়েড টিকার জন্য নিবন্ধন যেন কষ্টকর না হয়। সবার জন্য এটি সহজ, বিনামূল্যে ও গ্রহণযোগ্য রাখতে হবে। মানুষকে বোঝাতে হবে—এটা বিলাসিতা নয়, বেঁচে থাকার প্রয়োজন।’

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশের সময়: মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৫ । ৬:১৭ অপরাহ্ণ