ভোলায় দুই ব্যবসায়ীর দ্বন্দ্বে লঙ্কা কান্ড, আহত ১৫

ভোলা প্রতিনিধি :
প্রকাশের সময়: মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ । ৯:১৭ অপরাহ্ণ

ভোলায় ব্যবসায়িক লেনদেনকে কেন্দ্র করে পার্শ্ববর্তী দুই ইউনিয়নের বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে গুরুতর জখম ৩ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল ও ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। গতকাল সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার দিকে সদর উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের মাদরাসা বাজার এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া দুই ইউনিয়ন হলো আলীনগর ও চরসামাইয়া ইউনিয়ন। সংঘর্ষে আলীনগর ইউনিয়নের আহতরা হলেন- মো. ছালেম, ইউসুফ, মহিন হাওলাদার, নুর ইসলাম, মাসুম, সজিব ও আল আমিন। তাদের মধ্যে ছালেম ও ইউসুফকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে শের-ই বাংলা মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে। অপরদিকে চরসামাইয়া ইউনিয়নের আহতরা হলেন- মো. ফেরদৌস, জুলু তালুকদার, হিরন হাওলাদার, সুমন ও বাবুল। তাদের মধ্যে জুলু তালুকদারকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চরসামাইয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা হাসিব ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির মালিক ফেরদৌস ও একই ইউনিয়নের স’মিল ব্যবসায়ী মো. আব্বাসের মধ্যে ব্যবসায়িক লেনদেন নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফেরদৌস আব্বাসকে ফোন করে মাদরাসা বাজারে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ডেকে আনেন। একপর্যায়ে ফেরদৌসের ম্যানেজার চরসামাইয়া ইউনিয়নের মো. পিন্টু ও সমিল ব্যবসায়ী আব্বাসের ম্যানেজার আলীনগর ইউনিয়নের মহিন হাওলাদার বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।

এর কিছুক্ষণ পর ঘটনাটির মীমাংসার জন্য স্থানীয়রা বসার প্রস্তুতি নিলে দুই ইউনিয়নের শতাধিক বাসিন্দা দা, রড ও লাঠিসোঁটা নিয়ে মাদরাসা বাজারে এসে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। পরে সংঘর্ষে উভয়পক্ষের গুরুতর আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

আলীনগর ইউনিয়নের মো. রাসেল অভিযোগ করে বলেন, ‘চরসামাইয়া ইউনিয়নের ফেরদৌস মেম্বারের ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির ডিজিটাল ওজন মাপার স্কেলে আব্বাস তার স’মিলের গাড়ির ওজন না মাপানোর কারণে ফেরদৌস ক্ষিপ্ত হয়ে হুমকি-ধামকি দেন। এ ঘটনায় ফেরদৌসের ম্যানেজার মো. পিন্টু আব্বাসের সঙ্গে অশোভনীয় আচরণ করলে আব্বাসের সঙ্গে থাকা ম্যানেজার মহিন হাওলাদার প্রতিবাদ করেন।

মহিন প্রতিবাদ করায় তাকে মারধর করেন ফেরদৌসের লোকজন। পরবর্তীতে মহিনকে মারধরের খবর পার্শ্ববর্তী মাদরাসা বাজারে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাকে রক্ষা করতে গেলে ফেরদৌস মেম্বারের লোকজন হাওলাদার বাড়িতে হামলা চালায়। হামলায় তাদের প্রায় ১০-১২ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদেরকে বরিশাল নেওয়া হয়েছে।’

পাল্টা অভিযোগ করে চরসামাইয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. পিন্টু বলেন, ‘গত ২-৩ মাস ধরে বাকিতে সমিল মালিক আব্বাস প্রতিদিন ফেরদৌস মেম্বারের ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির ডিজিটাল স্কেলে সমিলের লাকড়ি ও ভূসির গাড়ির ওজন মাপ দেন। সোমবার ফোন দিয়ে বাকি টাকা চাওয়াতে আলীনগর ইউনিয়নের লোকজন অতর্কিতভাবে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। হামলায় তাদের ১০-১২ আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে জুলু তালুকদারের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকায় নেওয়া হচ্ছে।’

ভোলা সদর সদর মডেল থানার ওসি আবু শাহাদাৎ মো. হাচনাইন পারভেজ বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থালে পুলিশ গিয়ে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এ ঘটনায় এখানো কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 

প্রকাশক ও সম্পাদক: মেহেরুন্নেছা বেগম।  কপিরাইট © ২০২৫ দৈনিক আজকের বার্তা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

প্রিন্ট করুন