দীর্ঘ ২২ বছরেও অবকাঠামোগত উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালিশুরি ইউনিয়নের রাজাপুর ছালেহিয়া দাখিল মাদ্রাসায়। ফাটল ধরা দেয়াল ও ছাদ, খসে পড়া পলেস্তারা, ভাঙাচোরা দরজা-জানালা আর বৃষ্টির পানি চুঁইয়ে পড়া—এসব ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন চলছে পাঠদান। ফলে আতঙ্কে রয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, ২০০৩ সালে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে নির্মিত চার কক্ষবিশিষ্ট ভবনেই এখনো চলছে পড়াশোনা। বর্তমানে দুটি কক্ষে নবম ও দশম শ্রেণির ক্লাস হয়। একটি কক্ষ সুপারের অফিস হিসেবে, অন্যটি শিক্ষক মিলনায়তন হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। পাশাপাশি রয়েছে একটি টিনশেড ঘর, যার অবস্থা আরও নাজুক। বর্ষায় ছাদ দিয়ে পানি ঝরে পড়ে, চারপাশে জমে থাকে কাদাপানি।
জানতে চাইলে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী আসাদুল বলেন, ‘ভবনের অবস্থা এত খারাপ যে সব সময় আতঙ্কে থাকি। কখন যে ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে কিংবা পুরো ছাদ ধসে পড়ে, সে ভয় নিয়ে ক্লাস করি।’ সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী মানসুরা আক্তার বলে, ‘টিনের ফুটো দিয়ে পানি পড়ে কাদার মধ্যে বসে পড়তে হয়। বইপত্র ভিজে যায়। ঝড় হলে পুরো ঘর দুলে ওঠে, তখন ভয়ে থাকি।’
প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দা মো. আল-আমিন বলেন, ‘এলাকার সন্তানরা আতঙ্কের মধ্যে পড়াশোনা করছে। যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’ সহকারী শিক্ষক আনিসুর রহমান বলেন, ‘ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ভয়ে অমনোযোগী থাকে। বর্ষায় উপস্থিতিও কমে যায়। তাই নতুন ভবন জরুরি।’
মাদ্রাসার সুপার মাওলানা লোকমান হোসেন বলেন, ‘পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে ভবনটির অবস্থা নাজুক। একাধিকবার আবেদন করলেও সুফল পাইনি।’ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. বেল্লাল হোসেন বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর ভালো ফলাফল করছে। নতুন ভবন হলে ফল আরও ভালো হতো। আমি নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
এ বিষয়ে বাউফল উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার নূরনবী বলেন, ‘এ মাদ্রাসার ফল ভালো। শিক্ষার্থী-শিক্ষক সবকিছু আছে, শুধু অবকাঠামো নেই। নতুন ভবন অত্যন্ত জরুরি।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘মাদ্রাসাটি পরিদর্শন করে অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হবে।’

বাউফল প্রতিনিধি :
প্রকাশের সময়: শুক্রবার, ২৯ আগস্ট, ২০২৫ । ৬:২৪ অপরাহ্ণ