বরিশাল পিরোজপুরের নাজিরপুরে চাঁদা না পেয়ে এক ব্যবসায়ীর দোকানে লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে শেখমাটিয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক শাফিকুল ইসলাম শাফিকের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মো. মোস্তফা আলী সেখ গত ২৯ এপ্রিল পুলিশ সদর দপ্তরসহ একাধিক সরকারি দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন। এরপর গত ১৬ জুলাই সেনাবাহিনী থেকে সদ্য অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মো. মাহতাব হোসাইন সেখ একই বিষয়ে পিরোজপুরের পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দেন।
জানা যায়, মাহতাব ও মোস্তফা সম্পর্কে ভাই এবং উভয়ের বাড়ি শেখমাটিয়া ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামে।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সৌদি আরব থেকে ফিরে মোস্তফা আলী সেখ তার পৈতৃক সম্পত্তিতে প্রায় ১৫ লাখ টাকা বিনিয়োগে একটি ভবন নির্মাণ করে রড ও সিমেন্টের ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসা শুরুর কিছু দিনের মধ্যেই স্থানীয় মো. মোজাহিদুল ইসলাম দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে গত ২০ মার্চ সকাল ১০টার দিকে মোজাহিদুল ইসলাম, তার ভাই বিএনপি নেতা শাফিকুল ইসলাম শাফিক এবং ভুক্তভোগী মোস্তফা আলী শেখের চাচাতো ভাই এসকেন্দার আলী সেখসহ স্থানীয় আরও ২৫ থেকে ৩০ জন সন্ত্রাসী নিয়ে দোকানের পেছনের দেয়াল ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় দোকানে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরা, রড, সিমেন্ট, নগদ এক লাখ টাকা এবং লেপ-তোশকসহ অন্যান্য মালামাল লুট করা হয়। এমনকি লেপ-তোশকে আগুন ধরিয়ে দিয়ে সন্ত্রাসীরা আনন্দ করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মো. মোস্তফা আলী সেখ বলেন, বিএনপি নেতা শাফিকুল ইসলাম শাফিক ও তার ভাই মো. মোজাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে ২৫ থেকে ৩০ জন লোক আমার কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিলেন। কিন্তু আমি চাঁদা না দিলে তারা আমার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান লুট করে আড়াই টন রড, ৩০০ বস্তা সিমেন্ট, নগদ টাকাসহ বেশ কিছু মালামাল নিয়ে গেছে। থানায় অভিযোগ দিয়ে কোনো লাভ না হওয়ায় বাধ্য হয়ে পুলিশ সদর দপ্তর ও জেলা পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ করেছি।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বিএনপি নেতা শাফিকুল ইসলাম শাফিক বলেন, আমি রাজনীতি করি মানুষের জন্য, আমার বিরুদ্ধে আমার প্রতিপক্ষ বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। যে জায়গা নিয়ে ঝামেলা ওই জায়গার মালিক মোস্তফার চাচাতো ভাই এসকেন্দার আলী। এটা তাদের পারিবারিক বিরোধ এখানে আমাকে কেন জড়ানো হচ্ছে আমি জানি না।
এ বিষয়ে পিরোজপুরের পুলিশ সুপার খান মুহাম্মদ আবু নাসের বলেন, এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ আমরা পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো যাবে।
এদিকে অভিযোগটি নজরে আনা হলে নাজিরপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. মিজানুর রহমান দুলাল বলেন, আমাদের কাছে এমন কোনো অভিযোগ কেউ করেনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টা তদন্ত করে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশের সময়: বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫ । ৭:০৬ অপরাহ্ণ