আদালতের ফটকের সামনে হত্যা মামলার সাক্ষীকে হাতুড়িপেটা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশের সময়: রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫ । ৯:০০ অপরাহ্ণ

ঝালকাঠি প্রতিনিধি : ঝালকাঠিতে হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিয়ে ফেরার পথে এক সাক্ষীকে হাতুড়িপেটা করে গুরুতর জখম করার অভিযোগ উঠেছে আসামিদের বিরুদ্ধে। আজ রোববার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রধান ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় ঝালকাঠি সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. রহিবুল ইসলাম ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামানকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত মামলা নেওয়ার নির্দেশ দেন। জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মাহেব হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ভুক্তভোগী ব্যক্তির নাম আবদুল মন্নান মৃধা ওরফে চুন্নু (৫২)। তিনি জেলার নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য। তাঁর বাড়ি উপজেলার কয়া গ্রামে।

আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় নলছিটি উপজেলার কয়া গ্রামের একটি ইটভাটার সামনে দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রুবেল গাজী (২২) নামের এক তরুণ মারা যান। এ ঘটনায় রুবেল গাজীর বাবা জসিম গাজী ১৮ জনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় আজ সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য ছিল।

আজ ইউপির সাবেক সদস্য আবদুল মন্নান আদালতে সাক্ষী দিয়ে হত্যাকারী হিসেবে আসামিদের চিহ্নিত করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আসামিরা আদালতের কাঠগড়া থেকে বেরিয়ে প্রধান ফটকের সামনে হাতুড়ি দিয়ে আবদুল মন্নানের মাথাসহ বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। এ সময় ভুক্তভোগীর মোটরসাইকেলটি ভাঙচুর করা হয়। পরে বিচারপ্রার্থীরা এগিয়ে এসে রক্তাক্ত অবস্থায় আবদুল মন্নানকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এজলাসে নিয়ে যান। জেলা ও দায়রা জজ মো. রহিবুল ইসলাম ভুক্তভোগীর বিস্তারিত জবানবন্দি নেন।

নলছিটি থানার পুলিশ রুবেল হত্যা মামলা তদন্ত করে চলতি বছরের ৩ মে ১২ জন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দায়ের করেন। আসামিরা হলেন অহিদুল ইসলাম মৃধা (২৭), মো. রফিক মৃধা (৩২), সোহেল মাঝি (৩৬), সাইদুল ফকির (২৩), মো. সালাম ফকির (২৩), এনায়েতুর রহমান (৪৬), কালাম খান (৩২), নাসির খান (৪৮), মো. এরশাদ হাওলাদার (৩০), মো. রবিউল হাওলাদার (২০), মো. বাবুল মৃধা (৪৭) ও মো. সোহরাব মৃধা (৪৫)। মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে আছে।

আহত আবদুল মন্নান মৃধা বলেন, ‘রুবেল হত্যা মামলায় আসামিদের চিহ্নিত করে আজ আমি আদালতে সাক্ষী দিয়েছি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আসামিরা হত্যার উদ্দেশ্যে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে আমাকে রক্তাক্ত জখম করে।’

মামলার বাদী জসিম গাজী বলেন, মামলার সাক্ষীকে হত্যা করে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে হত্যা মামলা থেকে রেহাই পেতে চান তাঁরা।

জেলা জজ আদালতের পিপি মাহেব হোসেন বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। আবদুল মন্নান আদালতে সাক্ষী দিয়ে আসামিদের চিহ্নিত করেছেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আসামিরা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। জেলা ও দায়রা জজ মো. রহিবুল ইসলাম এ ঘটনায় সদর থানার ওসিকে দ্রুত মামলা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

সদর থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনা হাতে পেয়েছি। এ ঘটনায় দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।’

 

প্রকাশক ও সম্পাদক: মেহেরুন্নেছা বেগম।  কপিরাইট © ২০২৫ দৈনিক আজকের বার্তা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

প্রিন্ট করুন