শাজাহান খান, বাবুগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার দোয়ারিকা গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে কাঠ দিয়া টায়ার পুড়িয়ে তেল উৎপাদন করছে একটি চক্র। প্রতিষ্ঠানের মালিক মিজানুর রহমান স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মোয়াজ্জেম হোসেনের তত্ত্বাবধানে কৃষকের জমি ভাড়া নিয়ে এই কাজটি করছে চক্রটি। কাঠ ও টায়ার পোড়ানোর গন্ধে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
অনুমোদনহীন টায়ার রিসাইক্লিং প্লান্ট, যেখানে পুরাতন টায়ার পুড়িয়ে তেল উৎপাদন করা হচ্ছে। এ কার্যক্রমের ফলে কার্বন নিঃসরণ ও বিষাক্ত গ্যাসে এলাকায় পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।সোমবার সকাল ১০টায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে , পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, বিস্ফোরক লাইসেন্স, শিল্প মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের অনুমোদন ছাড়াই এ প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। প্লান্টটি দোয়ারিকা গ্রামের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় অবস্থিত, যার আশপাশে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও আবাসিক এলাকা রয়েছে। ফলে শিশু ও বয়স্করা শ্বাসকষ্টসহ নানা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে।প্রতিদিন পুরাতন টায়ার বয়লারে উত্তপ্ত করে কুলিং পদ্ধতিতে তেল নিষ্কাশন করা হয়, এতে বায়ুদূষণ, দুর্গন্ধ ও উচ্চ মাত্রার শব্দদূষণ ঘটছে। প্লান্টে প্রায় অর্ধশত শ্রমিক কাজ করছেন যাদের সুরক্ষা ব্যবস্থা নেই ফলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয়দের অভিযোগ, বহুবার আওয়ামী লীগ নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন বাদশাকে বলা হলো ক্ষমতার দাপটে তিনি বন্ধ করেনি । এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ জাহিদুল ইসলাম নয়ন বলেন, এটি পরিবেশের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। এটির অনুমোদন রয়েছে কিনা তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের খতিয়ে দেখা উচিত। স্থানীয় সুশীল সমাজ বলছেন, পরিবেশ রক্ষা ও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার স্বার্থে এ ধরনের কার্যক্রম বন্ধেরজন্য প্রশাসনের কাছে দাবি করছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ফারুক আহমেদ বলেন, পরিবেশ বিপর্যয়ের মতো কোনো ঘটনা ঘটলে কিংবা যথাযথ প্রক্রিয়ার বাইরে এ রিসাইকেলিং প্লান্ট গড়ে উঠলে অবশ্যই আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মোঃ মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের নির্দেশিকার কোন ধরনের বিচ্যুতি ঘাটলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের মালিক মোঃ মিজানুর রহমান বলেন তারা সব ধরনের অনুমোদন নিয়েই এ কার্যক্রম চলমান রেখেছে। তবে পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি ছাড়পত্র ছাড়া শিল্প মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন কিংবা জেলা প্রশাসনের কোন অনুমোদন দেখাতে পারেনি।

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশের সময়: মঙ্গলবার, ২২ জুলাই, ২০২৫ । ৭:২৩ অপরাহ্ণ