জিয়া উদ্দিন বাবুঃ সারা দেশের সাথে একযোগে বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে খোলা বাজারে চাল বিক্রি কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন বিভাগীয় কমিশনার মো: আমিন উল আহসান। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায় ওএমএস কার্যক্রমের আওতায় খোলা বাজারে চাল বিক্রি কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।
পরে বেলা ১২ টায় বরিশাল সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসন। সাংবাদিকদের সাথে মতিবিনিময় কালে বিভাগীয় কমিশনার আমিন উল আহসান বলেন, গোটা বরিশাল বিভাগে চলমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি মোকাবেলার অংশ হিসেবে সারাদেশে চালের মূল্য স্থিতিশীল রাখা ও নিম্ন আয়ের মানুষকে স্বল্প মূল্যে খাদ্য সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে সরকার চলমান ওএমএস কার্যক্রমের সম্প্রসারণ করেছে। যা আজ থেকে একটানা আগামী তিনমাস ধরে চলবে।
যার ধারাবাহিকতায় ৩৬ টি ডিলার পয়েন্টের স্থলে ১৫৪ জন ডিলারের মাধ্যমে সিটি করপোরেশন, পৌরসভাসহ উপজেলা ও জেলাগুলোতে ৩০ টাকা কেজি দরে ভোক্তাদের মাঝে চাল বিক্রি করা হবে। যেখানে ডিলার প্রতি ২ মেট্রিকটন করে প্রতিদিন গোটা বরিশাল বিভাগে ৩০৮ মেট্রিকটন চাল প্রদান করা হবে।
একজন ক্রেতা দৈনিক ৫ কেজি চাল ক্রয় করতে পারবেন। এতে করে বরিশাল বিভাগে দৈনিক ৬১ হাজার ৬শত জন স্বল্প আয়ের মানুষ সুলভ মূল্যে চাল ক্রয়ের সুযোগ পাবেন। এছাড়া আটার মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ১১ জন ডিলারের মাধ্যমে ১৮ টাকা কেজি দরে আটা বিক্রি হবে। যেখানে প্রত্যেক ডিলার প্রতিদিন ৫ শত কেজি করে মোট ৫.৫০০ মেট্রিকটন আটা সরবরাহ করবেন।
একজন ক্রেতা দৈনিক সর্বোচ্চ ৩ কেজি আটা ক্রয় করতে পারবেন। এছাড়া টিসিবির কার্ডধারীগণও চাল ও আটা ক্রয়ের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন।
এছাড়া আজ থেকে সারাদেশে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১৫ টাকা কেজি দরে নির্ধারিত কার্ডধারীদের মাঝে প্রতিমাসে ৩০ কেজি হারে চাল বিক্রির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যে কার্যক্রম আজ থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত চলবে।
বিভাগীয় কমিশনার জানান, পুরো বরিশাল বিভাগে তালিকাভুক্ত ভোক্তা ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৪৯৩ জন। খাদ্যবান্ধব ডাটাবেজে যাচাই সম্পন্ন হওয়া প্রকৃত সুবিধাভোগীরা এ কার্যক্রমের আওতায় খাদ্যশস্য উত্তোলন করতে পারবেন। বরিশাল বিভাগের ৪২ টি উপজেলার ৩৬০ টি ইউনিয়নে এ কার্যক্রম চলমান থাকবে। বিভাগে খাদ্যবান্ধব খাতে প্রতি মাসে মোট বা ১৪৬০৬.৭৯০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ হবে।
ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে খাদ্য বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় জন প্রতিনিধি সম্মিলিতভাবে কাজ করবেন বলেও জানান তিনি। এদিকে সাংবাদিকদের সাথে মতিবিনিময় সভায় সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ১১ টি ডিলার পয়েন্টের স্থলে ২১ টি ডিলার পয়েন্ট করা হয়েছে জানিয়ে বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দান বলেন, আজ থেকে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনসহ জেলায় ১১টি ডিলার পয়েন্টের স্থলে বর্তমানে ৪৮ জন ডিলারের মাধ্যমে ৩০ টাকা কেজি দরে ভোক্তাদের মাঝে চাল বিক্রি করা হচ্ছে।
যেখানে বরিশাল জেলায় দৈনিক ১৯ হাজার ২ শত জন স্বল্প আয়ের মানুষ সুলভ মূল্যে চাল ক্রয়ের সুযোগ পাবেন। একইসাথে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১৫ টাকা কেজি দরে ১ লাখ ৬০ হাজার ৭৩৪ জন নির্ধারিত কার্ডধারী প্রত্যেকের মাঝে প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে চাল বিক্রি করা হবে।
এসময় জেলা প্রশাসক যে কোন ধরনের অনিয়ম ও সম্যসার জন্য ৩৩৩ তে ফোন দিয়ে অবগত করার জন্য সুবিধাভোগীদের প্রতি আহবান জানান।
সেইসাথে শুক্র ও শনিবার সকাল ৯ টা থেকে প্রতিদিন ওএমএস এর কার্যক্রম চলমান থাকবে বলেও জানান তিনি। এছাড়া একই ব্যক্তির বার বার পণ্য ক্রয় বন্ধে কার্যকর ভূমিকা রাখা হবেও বলে তিনি জানিয়েছেন।
এদিকে এই চাল পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। তারা বলছেন, দোকানের চেয়ে অর্ধেক দামে এই চাল এবং আটা প্রািপ্ত সংসার খরচে সহায়ক হবে। সংবাদ সম্মেলনে বরিশাল খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা ও শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসকাবের সভাপিত কাজী নাসির উদ্দিন বাবুল সহ বরিশালের সিনিয়র সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
