ঢাকা
অনলাইন ডেস্ক:
বান্দরবানের রুমার দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে সেনাবাহিনীর সঙ্গে জেএসএস সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গোলাগুলিতে নিহত সেনা সদস্য শহীদ হাবিবুর রহমানের মরদেহ নিজ জেলা পটুয়াখালীতে পৌঁছেছে।
বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫.২০ মিনিটে পটুয়াখালী কাজী আবুল কাসেম স্টেডিয়ামে সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার মরদেহ নিয়ে অবতরণ করেন।
সেখানে সেনা সদস্যের বড় ছেলে হাসিবুর রহমান ও পরিবার মরদেহ গ্রহণ করেন। এসময় শহীদের ছোট ছেলে ও সেনা সদস্য হাবিব বিন হাসান সঙ্গে ছিলেন।
শহীদ হাবিবুর রহমানের নিজ বাড়ি পটুয়াখালী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বহাল গাছিয়ায়। সেনা সদস্যের মৃত্যু পরিবার, আত্মীয় স্বজন ও এলাকায় চলছে শোকের মাতম। তার গ্রামের বাড়ি জেলার কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর থানার লতিপুর গ্রামের আব্দুল মজিদ সরদারের দ্বিতীয় সন্তান। নির্বাক হয়ে আছে বাবা, মায়ের চিৎকারে ভারি হয়ে আসছে আকাশ।
সেনাবাহিনীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জানাজা শেষে নিজের হাতে গড়া বাড়ি পটুয়াখালী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের গাজী মধ্যের বাড়ির আঙ্গিনায় দাফন করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিবার।
শহীদ হাবিবুর রহমানের বড় ছেলে হাসিবুর রহমান বলেন, বড় ছেলে হাসিবুর রহমান এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না, বাবার মৃত্যু। অভিযানে যাওয়ার আগে বড় ছেলের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন শহীদ হাবিবুর রহমান। বলেন, কোনো দাবি থাকলে ক্ষমা করে দিও, একটা কাজে বের হচ্ছি। তারপরও দেশের জন্য নিজের বাবার প্রাণ উৎসর্গকে গর্বের সঙ্গে নিয়েছেন।
স্থানীয় প্রতিবেশীরা জানান, সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার শহীদ হাবিবুর রহমান ছিলেন নম্র ভদ্র ও শান্ত স্বভাবের। নতুন নিজ বাড়ির আশপাশে প্রতিবেশীদের সঙ্গে মধুর সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখ আনুমানিক রাত সাড়ে ১০টায় বান্দরবানের রুমা জোনের একটি টহল দলের সঙ্গে সন্তু লারমা সমর্থিত জেএসএস মূল দলের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গুলি বিনিময়ের ঘটনায় সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিব শহীদ হয়। এসময় তিনজন সশস্ত্র সন্ত্রাসী নিহত এবং একজন সেনাসদস্য গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
গত রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টায় সেনাবাহিনীর টহল দলটি উক্ত এলাকায় পৌঁছালে পাড়ার নিকটস্থ একটি জুম ঘর থেকে সন্ত্রাসীরা অতর্কিত গুলিবর্ষণ করে। জবাবে সেনা টহল দলের সাহসী পাল্টা হামলায় সন্তু লারমার মদদপুষ্ট জেএসএস মূল দলের তিনজন সশস্ত্র সন্ত্রাসী গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায়।
এ সময় পলায়নপর সন্ত্রাসীদের এলোপাথাড়ি গুলিতে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে টহল কমান্ডার সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমান ঘটনাস্থলেই শাহাদাত বরণ করেন এবং সৈনিক ফিরোজ নামে একজন সেনাসদস্য ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। আহত সেনা সদস্যকে আজ সকালে রুমা হতে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়।
