নিউজ ডেস্ক:
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মালদ্বীপ সফরে দুই দেশের মধ্যে চারটি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে।
রোববার (১৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
ড. মোমেন জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২২-২৩ ডিসেম্বর মালদ্বীপ সফর করবেন। সে সময় দুই দেশের মধ্যে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, দ্বৈত করারোপ, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ে কয়েকটি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে।
২২ ডিসেম্বর একটি বিশেষ ফ্লাইটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মালেতে অবতরণ করবেন। এ সময় বিমানবন্দরে মালদ্বীপ সরকারের পক্ষ থেকে তাকে অভ্যর্থনা জানাবেন দেশটির পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। ২৩ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হবে।
এরপর প্রধানমন্ত্রী প্রেসিডেন্সিয়াল প্রাসাদে যাবেন। সেখানে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সফরকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মালদ্বীপের ভাইস প্রেসিডেন্ট, স্পিকার ও প্রধান বিচারপতি সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন বলে জানা গেছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী মালদ্বীপের জাতীয় পার্লামেন্টে বক্তব্য রাখবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
মালদ্বীপে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে ভার্চ্যুয়ালি কুশল বিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দেওয়া ১৩টি সেনা যান বন্ধুত্বের নিদর্শন স্বরূপ মালদ্বীপের প্রতিরক্ষা দপ্তরের কাছে হস্তান্তর করা হবে। আনুষ্ঠানিকতা শেষে দুই দেশের মধ্যে একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশিত হবে এবং দুই নেতা যৌথভাবে মালদ্বীপের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের সামনে তাদের কর্মসূচি উপস্থাপন করবেন।
ওইদিন সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী তার সম্মানে মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি কর্তৃক আয়োজিত রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে যোগ দেবেন। এ সফরে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী, সেনাপ্রধান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, পররাষ্ট্র সচিবসহ প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের কর্মকর্তারা এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তারা যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে।
ড. মোমেন বলেন, মালদ্বীপ আমাদের বন্ধুপ্রতীম প্রতিবেশী রাষ্ট্র। দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে অগ্রসর মালদ্বীপে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি কর্মরত আছেন। দেশটি সম্প্রতি আরও কিছু দ্বীপে পর্যটন রিসোর্ট তৈরির পরিকল্পনা করেছে। এতে করে ভবিষ্যতে আরও বেশি বাংলাদেশি শ্রমিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে বলে আশা করা যায়। সম্প্রতি মালদ্বীপ বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে তাদের শিক্ষার্থী-নাগরিকদের প্রেরণের প্রস্তাব করায় দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র সৃষ্টি হবে বলে আমরা আশাবাদী।
আলোচ্য সফরের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য-বিনিয়োগ সহযোগিতা সম্প্রসারণ, বাংলাদেশের শ্রম বাজার সুসংহতকরণ ও সম্প্রসারণ, অনিয়মিত শ্রমিকদের নিয়মিতকরণ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হবে; যাতে বাংলাদেশের সার্ভিস সেক্টর প্রসার লাভ করতে পারে। একইসঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হবে।