আজকের বার্তা
আজকের বার্তা

কুয়াকাটায় উচ্ছেদ আতঙ্কে জেলে পল্লীর সদস্যরা


আজকের বার্তা | প্রকাশিত: ডিসেম্বর ০৫, ২০২১ ৫:১৪ পূর্বাহ্ণ কুয়াকাটায় উচ্ছেদ আতঙ্কে জেলে পল্লীর সদস্যরা
Spread the love

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড় ॥

ফাতেমা বেগম ও রশিদ হাওলাদার দম্পতির চার সন্তানসহ ৫০টি বছর সাগরপারে বসতি। এক সময় সাগরের পানির কাছে যেতে তিন-চার ঘন্টা সময় লাগত তাঁদের। আর এখন ভাঙ্গনের তান্ডবে বেড়িবাঁধের স্লোপে এসে ঠেকেছেন। তিন চার কিলোমিটার প্রস্থ সৈকত সাগরে বিলীন হয়েছে বলে এ দম্পতির ধারণা। কুয়াকাটা জিরো পয়েন্টের পশ্চিম দিকের জেলে পল্লীতে ৫০ পরিবারকে পুনর্বাসনের এক পরিবার এরা। জানালেন ছয় শতক জমির দলিলসহ একটি করে ঘর দেয়া হয়েছে। ওই পল্লী সাগরে বিলীন হয়ে গেছে।

রশিদ হাওলাদার জানালেন তাঁদের যে জমি বন্দোবস্ত দেয়া হয়েছে তা বেড়িবাঁধের ভিতরে। যার এসএ দাগ নম্বর ৫১৭৮। বন্দোবস্ত কেস নম্বর ৭১-কে/৯৯-২০০০। দলিল নম্বর ২২৪১/২০০০। এখন এই পরিবারটির যাওয়ার আর কোন জায়গা নেই। পানিউন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ মাইকিং করে এ জায়গা ছেড়ে যেতে বলেছেন।

ফাতেমা বেগম জানালেন, সিডরের ঝড়ের আগে তার প্রথম স্বামী মোহাম্মদ ফকির মারা গেছেন। পরে রশিদ হাওলাদারকে বিয়ে করে সংসার করছেন। এ দম্পতিসহ আরও কয়েকজন এসে জানালেন তাঁদের যেই দাগের খাস জমি বন্দোবস্ত দেয়া হয়েছে সেটা বুঝিয়ে দেয়া হোক। ওই সময় দলিলের জমিতে পুনর্বাসিত করলে এখন আর উচ্ছেদ শঙ্কায় থাকতে হতো না ।

এভাবে কুয়াকাটায় জিরো পয়েন্টের পশ্চিম দিকের শতাধিক জেলে পরিবারে এখন বিরাজ করছে উচ্ছেদ আতঙ্ক। সবচেয়ে শঙ্কার খবর হচ্ছে এসব মানুষের কাছে এই ভেবে যে, তাঁদের জীবিকার ক্ষেত্র সাগর পার থেকে সরে গেলে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়বেন। বিশাল সাগর এসব জেলেদের বসতি বার বার গিলে খেয়ে ফেলেছে ঠিকই; কিন্তু সেই উত্তাল সাগরই তাঁদের পেটের যোগান মাছ ধরার সুযোগ করে দিয়েছে।

এসব খুটা জেলেদেও সংগঠণ আশার আলো সমবায় সমিতির সভাপতি মোঃ নিজাম শেখ দাবি করলেন এদের যেখানের জমি বন্দোবস্ত দেয়া হয়েছে সেখানে বসবাসের সুযোগ করে দেয়া হোক। আর যারা বন্দোবস্ত পায়নি তাঁদেরকে বেড়িবাঁধের ভিতরে আবাসন করে পুনর্বাসন করা হোক।

কলাপাড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) জগৎবন্ধু মন্ডল জানান, তিনি বিষয়টি পুর্নাঙ্গভাবে না জেনে এ বিষয় এই মুহুর্তে কিছু বলতে পারছেন না। তবে সাগরপাড়ের এই জেলে পল্লীর দরিদ্র এসব পরিবারের সদস্যরা এখন কোথায় গিয়ে শেষ আশ্রয় নিবেন তা ভেবে অস্থির হয়ে পড়েছেন। তারা যে কোন মূল্যে তাঁদের পুনর্বাসনের দাবি করেছেন।