Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the rocket domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/dailyajkerbarta/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114 তারল্য ব্যবস্থাপনায় বড় চাপে পড়বে ব্যাংক - আজকের বার্তা
আজকের বার্তা | প্রকাশিত: এপ্রিল ১৭, ২০২১ ২:৪৩ অপরাহ্ণ
Spread the love
বার্তা ডেস্ক ॥
ব্যাংকিং খাতে দেশীয় ঝুঁকি মোকাবিলার ব্যবস্থাপনার বিষয়ে একটি নতুন নীতিমালা জারি করেছে বাংলাশে ব্যাংক। এর আওতায় ব্যাংকগুলোকে ঝুঁকি মোকাবিলার জন্য নিয়মিত প্রত্যক্ষ বা নগদ ঋণের বিপরীতে বাড়তি হারে প্রভিশন রাখতে হবে। এতে প্রভিশন বাবদ ব্যাংকগুলোর তহবিল আটকে থাকার পরিমাণ বেড়ে যাবে। ফলে তারল্য ব্যবস্থাপনায় ব্যাংকগুলো বড় ধরনের চাপে পড়বে। কেননা একদিকে প্রভিশন বাবদ আটকে থাকা অর্থের বিপরীতে আমানতকারীদের নিয়মিত সুদ দিতে হবে, অন্যদিকে এর বিপরীতে কোনো আয় হবে না ব্যাংকের। এদিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাংকগুলোকে প্রতিযোগিতায় আরও সক্ষম করে গড়ে তুলতে ঝুঁকি মোকাবিলায় সক্ষমতা অর্জনে এর বিকল্প নেই। মঙ্গলবার রাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এ নীতিমালাটি জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এতে দেশীয় ঝুঁকি মোকাবিলায় ব্যাংকগুলোকে নিয়মিত প্রত্যক্ষ ঋণের বিপরীতে বাড়তি হারে প্রভিশন রাখার বিধান করা হয়েছে। এ হার শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত। বর্তমানে নিয়মিত ঋণের বিপরীতে ১ থেকে ২ শতাংশ হারে প্রভিশন রাখতে হয়। নতুন নীতিমালাটি কার্যকর হবে আগামী বছরের প্রথম প্রান্তিক থেকে অর্থাৎ ২০২২ সালের মার্চ থেকে। সংশ্লিষ্টরা জানান, নীতিমালাটি কার্যকর হলে ব্যাংকগুলোতে বাড়তি হারে প্রভিশন রাখতে গিয়ে তারল্য ব্যবস্থাপনার বড় চাপে পড়তে হবে। তখন নিয়মিত ঋণের বিপরীতে এখনকার চেয়ে আরও বেশি প্রভিশন রাখতে হবে। এতে ব্যাংকের তহবিল আটকে যাবে। এর বিপরীতে আমানতকারীদের নিয়মিত সুদ দিতে হবে। কিন্তু এর বিপরীতে ব্যাংক কোনো আয় করতে পারবে না। তবে বিভিন্ন বন্ড আকারেও প্রভিশন রাখা যায়। এগুলোতে সুদের হার খুবই কম। ফলে এতে ব্যাংকের ক্ষতি হবে। আয় কমবে। বাড়বে তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয়। এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন বলেন, আন্তর্জাতিক নীতির বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। এখন ঝুঁকি মোকাবিলার বিষয়ে ব্যাংকগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে হবে। তখন বাড়তি প্রভিশন রাখায় কোনো চাপ হবে না। এছাড়া প্রভিশন করোনার কারণে অনেক ছাড় দেয়া হয়েছে। নীতিমালায় ব্যাংকগুলোকে পাঁচটি ধাপে ঝুঁকি নিরূপণ করে এর বিপরীতে প্রভিশন রাখতে হবে। ধাপগুলো হচ্ছে, একেবারে নগণ্য, নিুপর্যায়, প্রান্তিক পর্যায়, মাঝারি ও উচ্চ ঝুঁকি। এর মধ্যে একেবারে নগণ্য ঝুঁকিতে কোনো প্রভিশন রাখতে হবে না। নিু পর্যায়ের ঝুঁকি থাকলে শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ, প্রান্তিক পর্যায়ের ঝুঁকি থাকলে ১ শতাংশ, মাঝারি ধরনের ঝুঁকি থাকল ৫ শতাংশ এবং উচ্চ ঝুঁকি থাকলে ২০ শতাংশ হারে প্রভিশন রাখতে হবে। প্রত্যক্ষ ঋণের বিপরীতে এ ঝুঁকি নিরূপণ করতে হবে। বর্তমানে ব্যাংকগুলো নিয়মিত প্রত্যক্ষ ঋণের বিপরীতে শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ হারে প্রভিশন রাখতে হয়। এছাড়া প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রভিশন রাখতে হবে। কোনো ঋণ বিশেষ হিসাবে গেলে বা খেলাপি হওয়ার আগের ধাপে পৌঁছলে ৫ শতাংশ, নিুমান হলে ২০ শতাংশ, সন্দেহজনক হলে ৫০ শতাংশ, মন্দ হলে শতভাগ প্রভিশন রাখতে হয়। নীতিমালা অনুযায়ী আগের মতো পরোক্ষ ঋণের (এলসি, ব্যাংক গ্যারান্টি, এলটিআর ইত্যাদি) বিপরীতে এখন কোনো প্রভিশন রাখতে হবে না। সূত্র জানায়, বর্তমান নীতিমালায় ১২টি ব্যাংক প্রভিশন রাখতে পারছে না। তাদের ঘাটতির পরিমাণ ৯ হাজার ৪৬৯ কোটি টাকা। তবে কয়েকটি ব্যাংকের বাড়তি প্রভিশন রয়েছে। ফলে ব্যাংকিং খাতে নিট প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা। এ প্রসঙ্গে বেসরকারি ব্যাংকের একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলছেন, করোনার কারণে ব্যাংকগুলোর আয় কমে গেছে। ঋণ আদায় হচ্ছে না। এমন কি সুদও আদায় হচ্ছে না। এ কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রভিশন খাতে ব্যাংকগুলোকে বড় ছাড় দিয়েছে। এতে ব্যাংকগুলোর গত বছরের প্রভিশন ঘাটতি কমবে। কিন্তু নতুন নীতিমালা কার্যকর করলে এ ঘাটতির পরিমাণ আরও বেড়ে যাবে। বাড়বে তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয়। সব মিলে ঝুঁকি মোকাবিলা করতে গিয়ে সংকট আরও বাড়বে। এজন্য নীতিমালাটি বাস্তবায়নের মেয়াদ আরও বাড়ানোর দাবি করেন তিনি। নীতিমালায়, ঝুঁকি মোকাবিলার জন্য ব্যাংকগুলোকে বিদেশি সম্পদ, পরিচালনা পর্ষদ, ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষর মাধ্যমে সৃষ্ট ঝুঁকিকে বিবেচনায় নিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক, সামষ্টিক অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত ঝুঁকিও বিবেচনায় নিতে হবে। এর ভিত্তিতে ঝুঁকি সহায়ক সূচক তৈরি করতে হবে। ব্যাংকগুলোকে তাদের ঝুঁকিভিত্তিক প্রতিবেদন প্রতি বছরের ৩১ মার্চের মধ্যে প্রকাশ করতে হবে। এতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ঝুঁকির মাত্রাও উল্লেখ করতে হবে। দেশীয় ঝুঁকির মধ্যে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক ঝুঁকির ব্যবস্থাপনা, দেশের ব্যাংক সুপারভিশন ব্যবস্থা, অর্থনীতিতে ব্যাংকিং খাতের অবদান, বৈদেশিক দায়দেনা, আন্তঃদেশীয় সীমান্তভিত্তিক লেনদেন, সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, ঋণ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিবেচনায় নিতে হবে।