বার্তা ডেস্ক ॥ সরকারি বিধিনিষেধ ও ঘূর্ণিঝড় মিধিলির মহা বিপদ সংকেত উপেক্ষা করে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের আয়োজনে ২ দিনব্যাপী বরিশালের বাবুগঞ্জে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রাথমিকের বৃত্তি পরীক্ষা।
উপজেলা শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তাদের সরাসরি সহযোগিতায় একটি কিন্ডারগার্টেন কে রিপ্রেজেন্ট করে উপজেলার সরকারি প্রাঃ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে বৃত্তি পরীক্ষা আয়োজনকে ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখছেন উপজেলায় কর্মরত অধিকাংশ শিক্ষকরা।
১৭ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় মিধিলির ৭ নং বিপদ সংকেত উপেক্ষা করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি নিয়ে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে উপজেলা শিক্ষা অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্তরা।
অনুষ্ঠিত বৃত্তি পরীক্ষায় হল সুপারের দায়িত্ব পালনকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ মাসুদ বলেন, সরকারি বিধিমালা অনুযায়ী প্রাথমিকে বৃত্তি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। আমাদের উপজেলা শিক্ষা অফিসার স্বাক্ষরিত চিঠি দেওয়ায় আয়োজিত বৃত্তি পরীক্ষায় দায়িত্ব পালন করেছি।
জানাযায়, প্রাথমিকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে পরীক্ষা বন্ধ হলেও ভিন্ন আঙ্গিকে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া হবে। গত (৮ আগস্ট) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ২০২৩ সালে প্রাথমিকের বৃত্তি পরীক্ষা নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তুহিন বিষয়টি নিশ্চিত করেন গণমাধ্যমে।
ওই আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বরিশালের বাবুগঞ্জের “মাষ্টার মাইন্ড” নামক একটি কিন্ডারগার্টেন আফসানা-আরিফ ফাউন্ডেশন কতৃক “মাষ্টার মাইন্ড ট্যালেন্ট হান্ট শিক্ষা বৃত্তি-২০২৩” নামে উপজেলা ব্যাপী সরকারি, বেসরকারি ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে বৃত্তি পরীক্ষার আয়োজন করে।
১৭ ও ১৮ নভেম্বর বাবুগঞ্জের কলেজ গেটে অবস্থিত কিন্ডারগার্টেন এর হলরুমে প্রায় ১ হাজার শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পুরো পরিক্ষা গ্রহন প্রক্রিয়ার তত্বাবধায়নে ছিল বাবুগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসের সহকারি শিক্ষা অফিসার রেজাউল করিম ও মনিরুল ইসলামসহ কয়েকজন।
মাষ্টার মাইন্ড কিন্ডারগার্টেন এর ভাইস প্রিন্সিপাল কামরুজ্জামান বলেন, আমরা শুধু আয়োজক সবকিছু উপজেলা সরকারি লোকজনের তত্বাবধানে হচ্ছে। খাতা মূল্যায়নও করবে শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে। আমরা সবকিছু বিধি অনুযায়ী করেছি।
অনুষ্ঠিত বৃত্তি পরীক্ষা সরকারি বিধিমালা অনুযায়ী হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে সহকারি শিক্ষা অফিসার রেজাউল করিম বলেন, সরকারি বিধিমালা অনুযায়ী হয়েছে কি না জানি না। আমরা শুধু ডিডি (বিভাগীয় ডেপুটি পরিচালক) নিলুফার ইয়াসমিন স্যারের নির্দেশনা ফলো করেছি।
মাষ্টার মাইন্ড কিন্ডারগার্টেন কতৃপক্ষ ডিডি স্যারের কাছে বৃত্তির আয়োজন করার জন্য একটি আবেদন করেন। ওই আবেদনের উপর ডিডি স্যার ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে সুপারিশ করেন। আমরা ওই নির্দেশনা অনুযায়ী কিন্ডারগার্টেন কতৃপক্ষের সাথে বসে পরিক্ষার মাধ্যমে মেধাবী শিক্ষার্থী বাছাই করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহন করেছি।
এব্যাপারে জানতে উপজেলা শিক্ষা অফিসার দিলদার নাহার কে গত তিনদিন যাবৎ একাধিকবার ফোন করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাকিলা রহমান বলেন,বিষয়টি আমি শুনেছি। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে তলব করা হয়েছে।
বিভাগীয় ডেপুটি পরিচালক (ডিডি) নিলুফার ইয়াসমিন বলেন, এটা আমাদের সরকারি কোন বিষয় না। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বৃত্তি দেওয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে আমার কাছে এসেছিলো। আমি মানবিক দৃষ্টি কোন থেকে উপজেলা শিক্ষা অফিসকে ব্যবস্থা গ্রহনের কথা জানিয়েছি।