বার্তা ডেস্ক ॥ প্রাচীন ইতিহস ও ঐতিহ্যে ঘেরা বরিশাল বিভাগের সবচেয়ে বড় উপজেলা বাকেরগঞ্জ এখন সরকারের উন্নয়নের জোয়ারে আমূল পরিবর্তন হয়েছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতায় বৃহত্তম এই উপজেলায় দূর্গাপাশা ইউনিয়নের তেতুলিয়া নদীতে নদী ভাঙ্গন প্রকল্পের কাজে ৬শ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে যে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়েছে। চারিদিকে শুধু উন্নয়নের ছোঁয়া আর উন্নয়নের চিত্র। ফলে মানুষকে আগে যেখানে পায়ে হেটে যেতে হতো, এখন সেখানে যানবাহন নিয়ে যেতে পারে। স্থানীয় জনসাধারণের মাঝে এখন উন্নয়ন বঞ্চিত থাকার আক্ষেপ নেই বললেই চলে। গ্রাম হবে শহর সরকারের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছে গ্রামের প্রান্তিক জনসাধারণ।
বৃহত্তম এই উপজেলায় ১৪ টি ইউনিয়ন দিয়ে ১১ টি নদী প্রবাহিত হয়েছে। এই উপজেলায় দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নদী হওয়ায় বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টি অনুধাবন করে বাকেরগঞ্জ উপজেলায় অন্যান্য উপজেলার চাইতে আলাদা গুরুত্ব দিয়ে তুলাতলী নদীর উপর ৫২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যায়ে ৪৪০ মিটার সেতু নির্মান করেছেন। বরিশাল-দুমকি আঞ্চলিক সড়কে রাঙ্গামাটি নদীর ওপর ১০ দশমিক ২৫ মিটার প্রশস্ত ২৮৩ দশমিক ১৮৮ মিটার দৈর্ঘ্যে দুই লেনে সেতু নির্মাণ কাজ শেষের দিকে। সেতুটি নির্মাণ প্রকল্পে ব্যয় ৯২ কোটি ৪৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা।
একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তার ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকারের আমলের পরিকল্পিত পরিকল্পনা ও টেকসই উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে পুরো উপজেলায় উন্নয়নের চিত্র বদলে গেছে।
বিগত ১৫ বছর ধরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটের প্রশ্নে টানা তিন মেয়াদে আসনটিতে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট থেকে মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টির তৎকালীন মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার।তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই সরকারের উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে এই উপজেলায়। এরপর তার সহধর্মিনী আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট থেকে মনোনয়ন পেয়ে রতনা আমিন দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে বিশেষ বরাদ্দের ও বিশেষ আবেদন ও অনুরোধ প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক বিশেষ বরাদ্দে ত্রান ও দূর্যোগ মন্ত্রণালয় ও এলজিইডি কর্তৃক ৩০ টি সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণ করেন। ২০১০ সাল থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত উপজেলায় ৭৫ টি স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসা ভবন নির্মাণ করা হয়। এছাড়াও ৩০ টি ভবনের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। ৫০ টির বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংস্কার করেছেন। তিনি বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ২৫ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করেছেন। উপজেলা বাসির স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারের প্রকল্পের অর্থ দিয়ে ৭০ টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করেছেন। এছাড়াও আরো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে ৩০ টি কমিউনিটি ক্লিনিক। এলজিইডি কর্তৃক বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে ২০১৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ২ শত ছোট বড় ব্রিজ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছেন। এছাড়াও ত্রান দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ৬০ টি বক্স কালভার্ট ও গার্ডার ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ করেছেন। বরিশাল সদর থেকে নলুয়া বাহেরচর পর্যন্ত রুহুল আমিন সড়ক ৩৫ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ কাজ ও বাকেরগঞ্জ বরগুনা সড়কে ২৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ কাজ শেষ করেছে। এছাড়াও এলজিইডি কর্তৃক বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে ৭০ কিলোমিটার রাস্তা কাপের্টিং ৩০ কিলোমিটার রাস্তা হেরিংবন ও ১০০ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এছাড়াও গত ৮ নভেম্বর বুধবার সকাল ১ঃ৩০ মিনিটে বাকেরগঞ্জের গারুড়িয়া ইউনিয়নের খয়রাবাদ নদীতে ১২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি সেতু নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। সেতুটি ৭৩০ মিটার দৈঘ্যের হবে বলে জানিয়েছেন এলজিইডি কর্তৃপক্ষ।
এছাড়াও গত ৩০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে ৬ষ্ঠ পর্যায়ে ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধনের অংশ হিসেবে বাকেরগঞ্জ উপজেলাতেও ১২ কোটি টাকা ব্যয় একটি মডেল মসজিদ নির্মাণ করেছেন। এছাড়া বাকেরগঞ্জ উপজেলায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম এর নির্মাণ কাজ শেষের দিকে।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বিশেষ উপহার হিসেবে বাকেরগঞ্জ উপজেলার ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারগুলোর মাঝে প্রথম দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে ২৬৬টি ও চতুর্থ ধাপে ২৭৭টি মোট – ৫৪৩ টি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারকে জমি সহ বাড়ি প্রদান করা হয়েছে।
এছাড়াও উপজেলার পৌরসভার ৯ টি ওয়ার্ডে বাকেরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, পৌর মেয়র লোকমান হোসেন ডাকুয়ার টানা তিনবার মেয়র নির্বাচিত হয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করে সরকারের গৃহীত উন্নয়নে প্রথম শ্রেণীর পৌরসভায় রূপান্তর করেছেন। মেয়রের প্রচেষ্টায় দেশি-বিদেশি এনজিও এর মাধ্যমে প্রায় ১ শত কোটি টাকার উন্নয়নের কাজ বাস্তবায়িত হয়েছে পৌর এলাকায়।
উপজেলার রাস্তা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্রীজ,কালভার্ট, সাইক্লোন সেন্টার, অবকাঠামো, প্রশাসনিক ভবন,ভূমি অফিস, ধর্মীয় প্রতিষ্টান, শতভাগ বিদ্যুৎয়ান, পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের একাধিক বহু তলা ভবন নির্মাণ ও গভীর নলকূপ, স্বাস্থ্য সম্মত টয়লেট, মুক্তিযোদ্ধা ভবণ, নির্বাচন অফিস, প্রাণীর সম্পদ অফিস ও আইসিটি ভবন নির্মাণ, যুব উন্নয়ন কেন্দ্র নির্মাণ, ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণ ও গ্রামীণ মাটির রাস্তা টেকসই করণসহ সব ধরনের উন্নয়ন সম্পন্ন হয়েছে এই সরকারের আমলে।
এগুলো মাঠ পর্যায়ে সুচারুভাবে বাস্তবায়ন করতে স্থানীয় সংসদ সদস্য রতনা আমিন, বাকেরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুর আলম চুন্নু, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল চন্দ্র শীলসহ উপজেলা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের মিয়া , ১৪ টি ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যানগন সহ উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদের সকলেই দিন রাত কঠোর পরিশ্রম করে গেছেন।
উপজেলা সর্বস্তরের মানুষ জানায় জানায়, বর্তমান সরকারের আমলে যে পরিমান উন্নয়ন বাকেরগঞ্জ হয়েছে, বিগত কোন সরকারের আমলে এতো উন্নয়ন হয়নি। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে বাকেরগঞ্জ উপজেলার মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হয়েছে।
এই উন্নয়ন প্রকল্প গুলো আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বর্তমান সরকার দল তথা আওয়ামীলীগের পক্ষে যথেষ্ট প্রভাব ফেলবে এবং স্থানীয় জনগণকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে ভোট প্রদানে প্রভাবিত করবে বলে স্থানীয় সচেতন মহল মনে করেন।