বার্তা ডেস্ক ॥ বরিশালের মুলাদী উপজেলায় জয়ন্তী নদী থেকে প্রয়াত অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামানের ছেলের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় এখনও কোনো ক্লু পায়নি পুলিশ। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক প্রাথমিকভাবে তাঁর শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্নও পাননি। স্বজনরা বলছেন, বড় ভাইকে হত্যায় যাবজ্জীবন দণ্ড পাওয়া এটিএম খালেকুজ্জামান কুশল (৪২) পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন। তিনি লঞ্চ থেকে কোথাও যাওয়ার সময় নদীতে পড়ে মারা যেতে পারেন।
গত সোমবার দুপুরে মুলাদীর নাতিরহাট এলাকা থেকে কুশলের মরদেহ উদ্ধারের পর পকেটে পাওয়া জাতীয় পরিচয়পত্র থেকে তাঁর পরিচয় শনাক্ত করা হয়। ওই দিন রাত ১১টার দিকে দুই ভগ্নিপতি ইমতিয়াজ আহমেদ ও জিয়াউল হক বরিশালে গিয়ে মৃতদেহ শনাক্ত করেন। ময়নাতদন্ত শেষে মৃতদেহ নিয়ে মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে তারা ঢাকায় ফেরেন।
তবে রাজধানীর সূত্রাপুরের বাসিন্দা কুশলের মৃত্যুর কারণ এবং দুর্গম এলাকা নাতিরহাটে কীভাবে গেলেন সেই রহস্যের কূলকিনারা পাওয়া যায়নি। কুশলের ভগ্নিপতি ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, কুশল মাদকাসক্ত এবং পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন। ২০১২ সালে সূত্রাপুরের বাসায় বড় ভাইকে হত্যায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পান তিনি। দীর্ঘদিন কারাভোগের পর সাধারণ ক্ষমায় কয়েক বছর আগে তিনি মুক্তি পান। তবে স্বাভাবিক জীবনে ফেরেননি। শুধু মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল তাঁর। অনেকদিন নিরুদ্দেশ থেকে মাঝে মাঝে মায়ের কাছে গিয়ে টাকা নিয়ে আসতেন। গত ২৪ অক্টোবর সর্বশেষ ঢাকার বাসায় মায়ের কাছে যান। এরপর খুলনা যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হন। মায়ের সঙ্গে ২৬ অক্টোবর কথা হলেও কোথায় আছেন জানাননি। এরপর থেকে তাঁর ফোন নম্বর বন্ধ ছিল।
তাদের ধারণা, কুশলের লঞ্চে কোথাও যাওয়ার সময় নদীতে পড়ে বা অন্য কোনো দুর্ঘটনায় মৃত্যু হতে পারে। পরে মৃতদেহ ভাসতে ভাসতে মুলাদীতে পৌঁছায়।
কুশলের মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করা বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ের ফরেনসিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কেফায়েতুল হায়দার বলেন, মৃতদেহে জখমের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন না পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত জানা যাবে না।
মুলাদী থানার ওসি মাহবুবুর রহমান জানান, কুশল মোবাইল ফোনে গত কয়েকদিন কার কার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন সেটি যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।