বার্তা ডেস্ক ॥ বরিশাল-৩ আসনে নৌকার টিকিট পেতে মরিয়া আওয়ামী লীগের ৭ জন নেতা। চলছে লবিং তদবির ও দৌঁড়ঝাপ। যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে। অপরদিকে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা নিয়ে টুকিটাকি আন্দোলনে মাধ্যমে নেতা-কর্মীদের চাঙা রাখার চেষ্টায় আছে বিএনপি। এ আসনে জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও নিজেদের ব্যস্ত রাখছেন নানা কর্মকা-ে। স্বাধীনতা পরবর্তী বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনটি বরাবরই আওয়ামী লীগের প্রতিকূলে। জোট-মহাজোটের গ্যারাকলে বরাবরই এ আসনটি হাতছাড়া হয়ে যায় আওয়ামী লীগের। তবে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বেশ সু-সংগঠিত হয়েছে এ আসনের আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীরা। বাবুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী মোঃ আতিকুর রহমান বলেন, ‘বরিশাল-৩ আসনে দলীয় সংসদ সদস্য হিসেবে যদি আমি মনোনয়ন পাই, এবং নির্বাচিত হই তাহলে উন্নয়নে কোনো বৈষম্য রাখব না।’তিনি বলেন, জনগণ তরুন নেতৃত্বে বিশ্বাসী, তারা আমাদের সাথেই রয়েছে। ভোটাররা বলছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে যারা নির্বাচিত হবেন, জনগণ যাদের সুশাসনে ভালো থাকবে তাদেরকেই বেছে নিতে চান তারা। ১৩ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত বরিশাল-৩ আসনের ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৫৪ হাজার। আগের চেয়ে সাংগঠনিক ভাবে শক্ত অবস্থানে এ আসনের আওয়ামীলীগ। এ আসনটির বর্তমান সংসদ সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু বিগত দিনের কর্মকা- সম্পর্কে স্থানীয় জনগনের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়া।স্থানীয় ভোটার ও সরকারদলীয় নেতাদের ভাষ্যমতে, লঞ্চ ব্যবসায়ী গোলাম কিবরিয়া টিপু প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে কোনো নজর দেননি। এমনকি সরকারের বরাদ্ধের টি আর কাবিখার সঠিক ব্যবহার না করে চায়ের দোকান, বাড়ির আঙিনায় বসার বেঞ্চ বানিয়ে সরকারী অর্থ লোপাট করেছেন। নিজের লঞ্চ ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় নিজের সংসদীয় আসনের মানুষের খোঁজ কিংবা এলাকার উন্নয়নের নূন্যতম ভূমিকা রাখতে পারেননি করোনাকালেও তাঁকে জনগণ পাশে পায়নি। যে আওয়ামী লীগের কাঁধে ভর করে ক্ষমতায় এসেছেন খোদ সেই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদে সাথেও রাখেননি সু-সম্পর্ক। যে কারণে বিভিন্ন সভা সমাবেশে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এর কঠোর জবাব দেওয়ার ঘোষনা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের। আসনটিতে তিনবার নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপির প্রার্থীরা। ২০০৮ সালে মহাজোটের কারণে আসনটি পায় জাপা। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টির ঘরে যায় আসনটি। ২০১৮ সালেও জোটের কারণে ওয়ার্কার্স পার্টি নৌকার টিকিট পেলেও আসনটি উন্মুক্ত করে দেওয়ার ফলে এমপি নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টির গোলাম কিবরিয়া টিপু। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর জানান ১৯৭৩ সাল থেকে এই আসনে আওয়ামী লীগের কোনো এমপি নেই। দলীয় নেতা-কর্মীরা অনেকটা অভিভাবকশূন্য। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে আছেন বরিশাল বিভাগ উন্নয়ন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও বাবুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য, মোঃ আতিকুর রহমান, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জহির উদ্দিন খসরু, যুবলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক মিজানুর রহমান, মুলাদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তারিকুল হাসান খান মিঠু, বাবুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এসএম খালেদ হোসেন স্বপন, বিএনপির হয়ে প্রার্থী হতে চান দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাধারন সম্পাদক ব্যারিস্টার মনিরুজ্জামান আসাদ ,ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি শেখ টিপু সুলতান, প্রার্থী হতে চাওয়ার কারণ হিসেবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আতিকুর রহমান বলেন, জোট-মহাজোটের কারণে স্থানীয়ভাবে দলের ক্ষতি হচ্ছে। এ ছাড়া যুগ যুগ ধরে উন্নয়ন বঞ্চিত হচ্ছে জনগণ। তাই উন্নয়ন বঞ্চিত বাবুগঞ্জ-মুলাদীর উন্নয়নে কাজ করতে চাই।