নিজেস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশালের মুলাদীতে পল্লী বিদ্যুতের ভূতুড়ে বিলে গ্রাহক হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। জুলাই-আগস্ট মাসের তুলনায় অধিকাংশ গ্রাহকের দুই থেকে পাঁচ গুণ বেশি বিল করা হয়েছে। এসব বিল কমাতে পল্লী বিদ্যুতের মুলাদী জোনাল অফিসে গিয়েও কোনো সুফল পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ তাদের। তবে, পল্লী বিদ্যুতের এজিএম মো. মোরসালিন ভূতুড়ে বিলের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তার দাবি, মিটার রিডাররা ভুল করায় দুই-এক জনের বিল কমবেশি হতে পারে। গ্রাহকরা অভিযোগ করলে অফিস থেকে বিল সমন্বয় করে দেওয়া হয়।
এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত এসব গ্রাহক পল্লীবিদ্যুতের এলাকা পরিচালক এবং বরিশাল পল্লী বিদ্যুত্ সমিতিতে অভিযোগ করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পল্লী বিদ্যুতের এক কর্মচারী বলেন, মিটাররিডাররা গ্রাহকের মিটার না দেখে বিল করায় এবং ‘সিস্টেম লস’ সমন্বয় করতে বাড়তি বিল করা হয়েছে। গ্রাহকরা অভিযোগ করলে অনেক ক্ষেত্রে বিল কমিয়ে দেওয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রেই গ্রাহককে বাড়তি বিল পরিশোধ করতে হয়। এতে সাধারণ গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
উপজেলার চরডিক্রী গ্রামের আজিজুল হাওলাদার জানান, জুলাই ও আগস্ট মাসে আবাসিকে তার বিদ্যুত্ বিল এসেছে সাড়ে ৪০০ টাকা। কিন্তু সেপ্টেম্বর মাসে বিল করা হয়েছে ১ হাজার ২০০ টাকা। মিটারের রিডিংয়ের সঙ্গে পল্লী বিদ্যুতের বিল কাগজের রিডিংয়ের কোনো মিল নেই। বিল সমন্বয় করতে পল্লী বিদ্যুত্ কার্যালয়ে গেলে কর্মকর্তা-কর্মকর্মচারীরা বিষয়টি সমন্বয় না করে অশোভন আচরণে বাগিবতণ্ডা করেন। এছাড়া পার্শ্ববর্তী ঘরের মিটার ব্যবহার করা না হলেও সেখানে ২০ ইউনিট ধরে ১৪৫ টাকা বিল করা হয়েছে। উপজেলার চরকালেখান গ্রামের আব্দুল হান্নান বলেন, চলতি মাসে তার ২ হাজার টাকার বেশি বিদ্যুত্ বিল করা হয়েছে। দুই দিন পল্লীবিদ্যুত্ অফিসে গেলেও বিল সমন্বয় করা হয়নি। কর্মকর্তারা প্রথমে বিল পরিশোধ করতে বলেন, সমন্বয়ের বিষয়টি তারা পরে দেখবেন বলে জানান।
পল্লী বিদ্যুতের এলাকার পরিচালক মো. শাহীন হোসেন জানান, গ্রাহকদের অনেক অভিযোগ রয়েছে। জুলাই-আগস্ট মাসে যাদের ২০০ টাকা বিল এসেছে, চলতি মাসে তাদের ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা বিল করা হয়েছে। গ্রাহকদের বাড়তি বিলের বিষয়টি নিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হবে। এ ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুতের মুলাদী জোনাল অফিসের এজিএম মো. মোরসালিন জানান, গ্রাহকদের ভূতুড়ে বিল কিংবা অশোভন আচরণের অভিযোগ সত্য নয়। মিটার রিডারদের লিখতে ভুল করায় কোনো গ্রাহকের বিল কমবেশি হলে সমন্বয় করতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়।