বার্তা ডেস্কঃ প্রায় তিন বছর ধরে বরিশালে সরবরাহ বন্ধ রয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) আওতাধীন যমুনা অয়েল কোম্পানির বোতলজাত এলপি গ্যাস। এতে বিপাকে পড়েছেন প্রায় দুই হাজার গ্রাহক। বাধ্য হয়ে তাদের বেশি দামে বেসরকারি কোম্পানির এলপিজি কিনতে হচ্ছে। তবে সিলিন্ডার সংকটের কারণে এই গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে বলে জানান কোম্পানি সংশ্লিষ্টরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগে প্রতি মাসে দুই চালানে ৯৫০টি সিলিন্ডার যমুনার বরিশাল ডিপোতে আসত। ৮০ জন পরিবেশকের মাধ্যমে ওই সিলিন্ডার ভোক্তাদের কাছে নির্ধারিত দরে বিক্রি হতো। এখন প্রায় তিন বছর ধরে সিলিন্ডার সংকটের অজুহাত দেখিয়ে বরিশাল ডিপোতে এলপি গ্যাস সরবরাহ হচ্ছে না। ফলে ডিলাররাও এ গ্যাস পাচ্ছেন না।
জানা যায়, সরকারি কোম্পানির সিলিন্ডারগুলোর অবস্থা খুবই নাজুক। ওই সিলিন্ডার বদল করে গ্রাহকদের অন্য কোম্পানির গ্যাস দেওয়া হয় না। ফলে যাদের কাছে সরকারি সিলিন্ডার ছিল, তারা কেজি দরে বিক্রি করে দিচ্ছেন।
বরিশাল নগরীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এক সময়ের যমুনা এলপি গ্যাসের গ্রাহক সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রতি সিলিন্ডার গ্যাসের দাম ছিল মাত্র ৬০০ টাকা। কিন্তু তিন বছর ধরে বরিশালে যমুনা কোম্পানির এলপিজি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে এখন অতিরিক্ত দামে বেসরকারি কোম্পানির এলপিজি কিনতে হচ্ছে। আর যমুনার গ্যাস না পেয়ে সিলিন্ডারটি ৫০০ টাকায় ভাঙারি ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে দিয়েছি।
যমুনার এলপিজির ডিলার নগরীর পোর্ট রোড এলাকার সিকদার অ্যান্ড কোংয়ের স্বত্বাধিকারী গিয়াস উদ্দিন বলেন, আমার ৪০ জন গ্রাহক ছিল, ৪০টি সিলিন্ডার পেতাম। কিন্তু সরবরাহ বন্ধ থাকায় তাদের গ্যাস দিতে পারছি না।
গ্যাস না আসার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, সিলিন্ডারগুলো পুরোনো ও মেয়াদ না থাকায় বিপিসি গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। পুরোনো ওই সিলিন্ডারে তারা গ্যাস দিলে তা গ্রাহক পর্যন্ত নেওয়ার আগেই বেরিয়ে যাচ্ছে। এমনকি দুর্ঘটনাও ঘটছে।
যমুনা ডিপো বরিশালের বিপণন কর্মকর্তা আল আমিন জানান, তাদের মজুত করা সিলিন্ডার নেই। যেগুলো আছে সেগুলো অনেক পুরোনো। এখন পর্যন্ত আড়াইশ সিলিন্ডার তাদের হাতে আছে। আরও ২০০ সিলিন্ডার দরকার। এখন গ্যাস আছে, কিন্তু সিলিন্ডার নেই। তাই সরবরা করা যাচ্ছে না।
যমুনা ডিপো সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় ডিপো কর্তৃপক্ষ শুরু থেকেই সিলিন্ডার সংকটের অজুহাত দেখাচ্ছিল। এভাবে ধীরে ধীরে বরিশালে যমুনার এলপি গ্যাস আসা বন্ধ হয়ে যায়।
যমুনার বরিশাল ডিপো ম্যানেজার প্রিয়তোষ নন্দী জানান, তাদের সিলিন্ডার সংকট রয়েছে। এ কারণে সরবরাহ কমে গেছে। তিনি বলেন, মূল্য কম হওয়ায় যমুনার এলপি গ্যাসের চাহিদা ছিল অনেক বেশি। আবার সরবরাহ চালুর জন্য বিপিসিতে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বিপিসির মহাব্যবস্থাপক (বণ্টন ও বিপণন) আবুল কালাম আজাদ বলেন, বরিশালে বিপিসির এলপি গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহ নেই, তা আমার জানা নেই। কেন যাচ্ছে না, সে বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হবে।