ঝালকাঠির রাজাপুরে রোলা মহিলা মাদ্রাসার নবম শ্রেণির এক ছাত্রী যৌন হয়রানির শিকার হয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থা সংকটাপন্ন।
বুধবার এ ঘটনায় আরিফ হাওলাদার নামে এক তরুণের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা। আরিফ (২০) উপজেলার রোলা দীঘিরপাড় এলাকার বাবুল হাওলাদারের ছেলে।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা জানান, দীর্ঘদিন মাদ্রাসায় আসা-যাওয়ার পথে তাঁর মেয়েকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল আরিফ। তাঁর মেয়ে এতে অসম্মতি জানায়। গত ৩০ আগস্ট দুপুর দেড়টার দিকে মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে অভিযুক্ত আরিফ ও তার সহযোগী বারবারপুর গ্রামের বাবুল মৃধার ছেলে রহিম মৃধা (২০) পথরোধ করে তাঁর মেয়েকে যৌন হয়রানি করে। এ সময় স্থানীয়রা অভিযুক্তদের আটক করে। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্যের সালিশিতে আর যৌন হয়রানি করবে না– এমন মুচলেকা রেখে আরিফ ও রহিমকে তাদের স্বজনের জিম্মায় দিয়ে দেন গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে মঙ্গলবার দুপুরে মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে আরিফ ও বাবুল তাঁর মেয়েকে রাস্তায় টানাহেঁচড়া করে এবং জোরপূর্বক তুলে নিতে চায়। খবর পেয়ে ওই ছাত্রীর বাবাসহ স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে গেলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। এরপর মেয়েকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন তিনি। কিছুক্ষণ পর তাঁর মেয়ে বমি শুরু করে।
ছাত্রীর বাবার অভিযোগ, ইভটিজিংয়ের এ ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে লোকলজ্জার ভয়ে বিষপান করে তার মেয়ে। বিষয়টি বুঝতে পেরে তাকে দ্রুত রাজাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে বরিশাল শেবাচিমে পাঠান। বর্তমানে তার মেয়ে অচেতন অবস্থায় রয়েছে বলেও জানান ছাত্রীর বাবা।
এ ঘটনার পর আত্মগোপনে রয়েছে অভিযুক্ত আরিফ হাওলাদার। অভিযোগের বিষয়ে জানতে বুধবার তাদের বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি।
তার মা নাসিমা বেগম দাবি করেন, ওই ছাত্রীর সাথে তার ছেলের যোগাযোগ ছিল এবং তারা দূর সম্পর্কের আত্মীয়। তার ছেলেকে গত ৩০ আগস্ট স্থানীয়রা মারধর করায় সে মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। তার ছেলে চট্টগ্রামে জাহাজে চাকুরি করে। মঙ্গলবার কর্মস্থলে চলে গেছে সে।
রাজাপুর থানার ওসি পুলক চন্দ্র রায় জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ওই ছাত্রীর বা তার পরিবার কোন অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।