পটুয়াখালীর উপকূলীয় এলাকার বিশাল একটি অংশজুড়ে কলাপাড়া ও কুয়াকাটার অংশ। কলাপাড়ার একদিকে অন্ধারমানিক মোহনা অন্যদিকে রামনাবাদ চ্যানেল। এর মধ্যে বিশাল একটি অংশে গত কয়েকদশক আগেও ছিল বিশাল বনভূমি। তবে তাঁর ৬০-৭০ শতাংশ বনাঞ্চল এখন ধ্বংসের মুখে। শুধু তাই নয় কুয়াকাটা সৈকতের লেম্বুর বন,ঝাউবন,গঙ্গামতি পয়েন্ট সহ বনাঞ্চলে থাকা বন্যপ্রাণী এখন খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।
উপকূলীয় এলাকার বিভিন্ন বনাঞ্চল ঘুরে দেখা যায়, বিশাল একটি অংশের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ দিন দিন মরে যাচ্ছে। আবার কেটে ফেলা হচ্ছে তবে এই সকল বনাঞ্চল রক্ষায় তেমন তদারকি নেই বল্লেই চলে। যার ফলে যেমন বাড়ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ তেমনি নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য অন্যদিকে উপকূলবাসীর ঝুঁকি তো বাড়ছেই।
পরিবেশকর্মী ও স্থানীয়দের দাবি, জোয়ারের তীব্রতা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে যে পরিমান বন ধ্বংস করছে তার দ্বিগুণ বন মানুষ সৃষ্ট কারনে ধ্বংস হচ্ছে আর বন বিভাগের উদাসীনতার কারনে দিন দিন এইসব বনভূমি উজার হয়ে চলছে।
বন বিভাগের তথ্য মতে, প্রায় ১৫ একর যায়গাজুড়ে মরে যাওয়া গাছগুলো দারিয়ে আছে।এসবের বেশিরভাগই গেওয়া ও কেওরা।এছাড়াও রয়েছে তেঁতুল,নিম,ক্যাজা,হিজল, কাঠবাদাম,ঝাউসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। মরে যাওয়া গাছ গুলো জোয়ারের পানিতে গাছের গোড়ায় বালু আটকে নষ্ট হচ্ছে।
ঝাউবন এলাকার প্রবীণ জেলে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, দিন দিন গাছগুলো সব মরে যাচ্ছে আগে কত বড় গাছ ছিলো কিন্তু এখন তো সবই বিলুপ্তির পথে।বিশেষ করে ২০০৭ এর সিডরের পর থেকেই বেশিরভাগ গাছগুলো মারা যাচ্ছে,এবং আগের চেয়ে জোয়ারের পানিও বেড়েছে।গাছ কমে যাওয়ায় উপকূলবাসীর ঝুঁকিও বাড়ছে দিন দিন।
গঙ্গামতি এলাকার আব্দুর জব্বার বলেন, একসময় এই জঙ্গলে প্রবেশ করতে ভয় করতো কত-শত পশু-পাখী ছিল আর এখন ছায়ায় বসার মত একটি গাছও নেই, আমাদের দাবি বেশী করে সরকার যেন গাছ লাগান তাতে হয়তো আবার ফিরে পাবো আমরা আগের বন-জঙ্গল।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপার কলাপাড়া জোনের সাধারন সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন মাননু বলেন,একটি হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে বিলিন হচ্ছে এসব বনাঞ্চল এবং আরেকটি হচ্ছে মানুষ সৃস্ট বিপর্যয় যেমন একটি চক্র বন উজার করে বিরন ভুমিতে পরিনত করছে প্রতিনিয়ত। সমুদ্র উপকূলীয় এই সবুজ বেষ্টনী যদি না থাকে তাহলে পুরো উপকূলবাসী হুমকির মুখে পরবে বলে মনে করি আমি।
পটুয়াখালী বন বিভাগের সহকারী বন কর্মকর্তা তারিকুর ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে এই উপকূলীয় এলাকায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার বিভিন্ন প্রাজতির গাছের চারা রোপনের উদ্যোগ নিয়েছি। এছাড়াও চর-বিজয়ে বনায়নের জন্য বারবার চেষ্টা করা হলেও সামুদ্রিক স্রোত তা বিলীন করে দিচ্ছে। কিছু দুষ্কৃতকারীদের জন্য বনের অনেক গাছ নষ্ট হচ্ছে আমরা আপনাদের সহযোগীতা চাচ্ছি।
এসএম আলমাস/কুয়াকাটা, পটুয়াখালী