Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the rocket domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/dailyajkerbarta/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114 বাম্পার ফলনেও ন্যায্য মূল্যের অভাবে শুকানো হচ্ছে মরিচ - আজকের বার্তা
বাম্পার ফলনেও ন্যায্য মূল্যের অভাবে শুকানো হচ্ছে মরিচ
আজকের বার্তা | প্রকাশিত: এপ্রিল ২৪, ২০২১ ৫:২৭ অপরাহ্ণ
Spread the love
নাসির উদ্দিন বিপ্লব, কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) ॥
কুয়াকাটায় এবার মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে, কিন্তু ঠিকসময় বাজারজাত করতে না পারায় লোকসান কাটিয়ে উঠতে ঘুরে দাঁড়াবার চেষ্টায় কৃষকরা মরিচ শুকানো শুরু করেছে। মাঠ জুড়ে কাঁচা পাকা মরিচ দেখে দূর থেকে মনে হয় লাল-সবুজ গালিচা বিছানো, কাছে গেলে এমন ভুল ভাঙ্গবে অনেকের। মাঠ জুড়ে মরিচের এমন বাম্পার ফলনে কৃষকের চোখে মুখে খুশির ঝিলিক বেশিক্ষণ ধরে রাখা যায়নি। কাঁচা মরিচের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে প্রথমে তারা হতাশ হলেও এখন অনেকেই মরিচ শুকানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ইতোমধ্যে ক্ষেত থেকে তুলে শুকিয়ে মজুদ করার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। চলতি মৌসুমে উপকূল ভাগে বৃষ্টি না হওয়ায় মরিচের ফলন যেমন ভালো হয়েছে, তেমনি মরিচের ঝাল বেশি বলে জানিয়েছেন মরিচ চাষীরা। করোনা মহামারির কারনে ঠিকভাবে বাজারজাত করতে না পারা এবং পাইকারের উপস্থিতি কম থাকায় এবারের বাজারে কাঁচা মরিচের দাম ছিল কম। তাই উৎপাদিত মরিচ শুকিয়ে মজুদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভূক্তভোগী কৃষকরা। করোনার প্রাদুর্ভাব কমে গেলে মজুদ করা মরিচ উপযুক্ত দামে বিক্রি হবে- এমনটাই আশা তাদের। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কুয়াকাটা সমুদ্র উপকূলসহ আশেপাশের উপজেলায় চলতি মৌসুমে বিন্দু, জিরা, বাঁশগাড়াসহ নানা জাতের মরিচের আবাদ হয়েছে। কৃষকদের উৎপাদিত মরিচ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে প্রতিবছর বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত হয়ে থাকে। ক্ষেত থেকে মরিচ তুলতে নারী-পুরুষ ও শিশুরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। দল বেধে গৃহবধূ ও শিশুরা গ্রামে মরিচ তোলার কাজে এখন ব্যস্ত। স্কুল বন্ধ থাকায় শিশুরা পরিবারের এ কাজে সহায়তা করছে। এছাড়া কৃষক পরিবারের বাইরেও নারী শ্রমিকরা মরিচ তোলার কাজে যুক্ত হয়েছেন। কৃষকদের তথ্যমতে, ক্ষেত থেকে যারা মরিচ তুলে আনেন তাদেরকে ৬ ভাগের ১ভাগ দিতে হয়। পানি সেচ, সার, ঔষধ, পরিচর্যা বাবদ অনেক টাকাই ব্যয় হয় সংশ্লিষ্ট কৃষকের। বাজারে বর্তম,ান মূল্যে মরিচ বিক্রি করতে গেলে লোকসান গুনতে হবে বলে দাবি মরিচ চাষীদের। এজন্য বেশিরভাগ কৃষকই ন্যায্য মূল্যের আশায় মরিচ মজুদ করতে শুরু করেছেন। এদিকে, উপযুক্ত দাম না পেলে আগামিতে মরিচ চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন কৃষকরা, এমন ধারনা করছেন অনেকে। কুয়াকাটা কচ্ছপখালী গ্রামের মরিচ চাষী হাবিব জানান, গত কয়েক বছরের চেয়ে এবার মরিচের ফলন ভালো হয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার মরিচ চাষ হয়েছে দ্বিগুন। উপকূলের কৃষকরা কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে মরিচের চাষাবাদ করছেন। বিগত বছর গুলোতে ভালো ফলন ও কাঙ্খিত দাম পাওয়ায় এবারে মরিচ চাষে ঝুঁকেছেন অনেক কৃষক। ভাগ্য ফেরানোর আশায় দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছিলেন তারা। মরিচ চাষী হাবিবের মতে, ধান ও গমের মত সরকার উৎপাদিত মরিচের মূল্য নির্ধারণ করে দিলে কৃষকরা লাভবান হতেন। উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, কুয়াকাটা পৌরসভাসহ উপজেলায় ৫০০ হেক্টরেরও বেশি জমিতে এবার মরিচের আবাদ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে গড়ে ৪ টন মরিচ উৎপাদন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ছাড়িয়েছে এবার। লতাচাপলী ইউনিয়নের মরিচ চাষী আঃ জলিল আকন জানান, গত বছর ভালো দাম পাওয়ায় এবারে তিনি বেশি জমিতে মরিচ আবাদ করেছেন। এ বছরে ফলন ভালো হলেও দাম অনেক কম। জলিল আকন আরও জানান, গত বছর ১মন কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ১৫’শ টাকা। এবার একই মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৮’শ টাকা মন। লতাচাপলি ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের কৃষক মোঃ আবজাল ভদ্র (৫০) জানান, তিনি প্রায় ৩একর জমিতে মরিচ চাষ করেছেন। চলতি মৌসুমের প্রথম দিকে এক কেজি কাঁচা মরিচ ২০ টাকায় বিক্রি করেছেন। এক মন কাঁচা মরিচ বিক্রি করে পেয়েছেন ৭’শ টাকা। যা দিয়ে উৎপাদন খরচ মেটানো সম্ভব নয়। এজন্য তিনি কাঁচা মরিচ বিক্রি না করে ক্ষেতে পাকিয়ে তুলে শুকানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল মান্নান বলেন, উপজেলায় এবার ৫০০ হেক্টরেরও বেশি জমিতে মরিচের আবাদ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে গড়ে ৪ টন উৎপাদন হয়েছে। আগামীতে আবাদ ধরে রাখতে হলে কৃষকদের ন্যায্য দাম পাওয়াটা জরুরী, অন্যথায় আগামীতে অনেক কৃষক মরিচ চাষাবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবেন।