আজকের বার্তা
আজকের বার্তা

পৈতৃক ভিটায় স্মৃতি জাদুঘর প্রতিষ্ঠার দাবি


আজকের বার্তা | প্রকাশিত: এপ্রিল ২৩, ২০২১ ৫:২১ অপরাহ্ণ পৈতৃক ভিটায় স্মৃতি জাদুঘর প্রতিষ্ঠার দাবি
রাহাদ সুমন, বানারীপাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি॥
সন্ধ্যা নদীর কোল ঘেঁষে  ইতিহাস-ঐতিহ্য ও জ্ঞানী-গুনীর চারণ ভূমি বরিশালের বানারীপাড়া। সেই সন্ধ্যা তীরের প্রাণকেন্দ্র পৌর শহরে ছিল ভারতের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান পদ্মবিভূষনে ভূষিত আধুনিক বাংলা কবিতার পুরোধা ব্যক্তিত্ব কবি শঙ্খ ঘোষের পৈতৃক বাড়ি। বুধবার ২১ এপ্রিল সকালে কলকাতায় নিজ বাসভবনে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন বানারীপাড়ায় আলো-ছায়ায় বেড়ে ওঠা সমকালীন বাংলা কবিতার অন্যতম প্রধান এ কবি। সর্বশেষ কবি তার পূর্বপুরুষের ভূমিতে ১৯৯৭ সালে এসেছিলেন। আবারও আসার আকুতি ছিলো তাঁর। বার্ধক্যের কারণে শরীরে রোগ শোক বাসা বাঁধায় সে আর হয়ে ওঠেনি। অনন্তলোকে পাড়ি জমানোয় শৈশব-কৈশোরের স্মৃতি ঘেরা বানারীপাড়ার পৈতৃক ভিটেয় এসে প্রিয় সন্ধ্যা নদীর সৌন্দর্য অবগাহনের  অভিপ্রায় তাঁর অপূর্ণই থেকে গেলো। ১৯৩২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি চাঁদপুরে মামা বাড়িতে জন্মগ্রহণ ও বাবার কর্মস্থল পাবনায় শিক্ষা জীবন কাটলেও  শৈশব এবং কৈশোরের অনেকটা সময় তিনি বানারীপাড়ায় কাটান। কবির বংশীয় ভ্রাতুষ্পুত্র বানারীপাড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি তরুণ ঘোষ বলেন, বানারীপাড়া পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডে ঘোষের বাড়ি কবির পৈতৃক নিবাস। কবি ১৯৯৭ সালে বানারীপাড়া এসে পৈতৃক ভিটাসহ তার শৈশবের স্মৃতি জড়ানো স্থানগুলো ঘুরে গেছেন। তরুণ ঘোষ জানান, শঙ্খ ঘোষ শৈশব-কৈশোরের স্মৃতি ঘেরা সন্ধ্যা নদীকে খুব ভালোবাসতেন। কলকাতা গেলে বারবার বলতেন- ‘আবার সন্ধ্যা নদীর তীরে যেতে চাই।’ বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা  গোলাম সালেহ মঞ্জু মোল¬া বলেন, আশির দশকেও একবার কবি বানারীপাড়ায় এসেছিলেন। তখন তাদের বাড়িতে মধ্যাহ্ন ভোজ করেন। ১৯৯৭ সালে কবি শঙ্খ ঘোষ বানারীপাড়ায় এলে তার সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ পেয়েছিলেন  সেই সময়ে বানারীপাড়া ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশনের (পাইলট) এসএসসি পরীক্ষার্থী বর্তমানে বিটিভির সাংবাদিক সুজন হালদার। তিনি বলেন, কবি নৌকায় করে সন্ধ্যা ও এর শাখা নদীতে  ঘুরে বেরিয়েছেন। দেখেছেন পৈতৃক ভিটা-বাড়ি। যাওয়ার সময় পৈতৃক ভিটার মাটিও নিয়ে গেছেন। এর মধ্য দিয়ে পৈতৃক ভিটের প্রতি তাঁর মমত্ববোধ ও গভীর টান ফুটে ওঠে। গত বছরের ৮ মার্চ কলকাতার কফি হাউসে কবির সঙ্গে শেষ দেখা হয়। তখন কবি বলেছিলেন- ‘শেষবারের মতো আবার যেতে চাই বানারীপাড়ায়, সন্ধ্যার তীরে।’ ১৯৯৭ সালে বানারীপাড়া ঘুরে তিনি লিখেছিলেন স্মৃতিকথা- ‘সন্ধ্যা নদীর জলে’ বাংলাদেশ। প্রথমা ২০১৯ সালে কবির স্মৃতিকথা বই আকারে প্রকাশ করে।  এতে কবি লিখেছেন, ‘৫০ বছর পর চলেছি নিজ গ্রামে। পাকা রাস্তা ধরে গাড়ি চলছে বানারীপাড়ার পথে। আমাদের ছোট বেলায় বাহন ছিল নৌকা।’ আরও লেখেন- ‘সকালের রোদে ঝলমল করছে সন্ধ্যা নদীর জল। স্টিমার ঘাট এখন আর নেই। আছে শুধু সারি বাঁধা নৌকা। মাঝিরা আমার কাছে জানতে চায়, আমি কি ওপারে যেতে চাই? সন্ধ্যা নদী ছুঁয়ে আছে আমাদের গ্রাম।’ ২০১৯ সালে বাংলা একাডেমির আমন্ত্রণে অমর একুশে গ্রন্থমেলায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে কবি শঙ্খ ঘোষ ঢাকায় আসেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে সেবার আর বানারীপাড়ায় ফেরা হয়নি। কলকাতায় থেকেও নিজ গ্রাম বানারীপাড়া ও সন্ধ্যা নদী তাঁর মন ছুঁয়ে ছিলো গভীর দেশপ্রেম ও মমত্ববোধে। এদিকে কবি শঙ্খ ঘোষের বানারীপাড়ার পৈত্রিক বাড়িতে ‘ কবি শঙ্খ ঘোষ স্মৃতি জাদুঘর’ প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিটিভির সাংবাদিক সুজন হালদার।

Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home/dailyajkerbarta/public_html/wp-includes/functions.php on line 5349

Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home/dailyajkerbarta/public_html/wp-content/plugins/really-simple-ssl/class-mixed-content-fixer.php on line 107