আজকের বার্তা
আজকের বার্তা

রাজাপুরে ৫ বছর পর মাটি খুঁড়ে কঙ্কাল উদ্ধার, হত্যা মামলার রহস্য উদঘাট


আজকের বার্তা | প্রকাশিত: অক্টোবর ০৬, ২০২২ ২:২৮ অপরাহ্ণ রাজাপুরে ৫ বছর পর মাটি খুঁড়ে কঙ্কাল উদ্ধার, হত্যা মামলার রহস্য উদঘাট
Spread the love

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ভর্ৎসনার জেরে তথ্য ফাঁস করে দেওয়ায় ঘটনার প্রায় ৫ বছর পর একটি হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে ঝালকাঠি সিআইডি পুলিশ। ২০১৭ সালের সেপ্টেস্বর মাসে জেলার রাজাপুর উপজেলার বাইপাস মোড় থেকে অপহরণ হন স্থানীয় বাসকাউন্টার বয় মীর খাইরুল ইসলাম (৩৭) ।

তাকে অপহরণের পর খুন করে মরদেহ গুম করা হয়েছে এমন অভিযোগে রাজাপুর থানায় মামলা করেন তার ভাই সিরাজুল ইসলাম সিরাজ। ৫ বছর পর বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঝালকাঠি সিআইডি পুলিশ রাজাপুর উপজেলার কানুদাসকাঠি গ্রাম থেকে মাটি খুঁড়ে খাইরুলের কঙ্কাল ও কিছু আলামত উদ্ধার করে।

পরে এদিন সন্ধ্যায় প্রেস ব্রিফিং হত্যার ঘটনা সম্পর্কে তথ্য জানান সিআইডি ঝালকাঠি ক্যাম্পের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. এহসানুল হক। এসময় উপস্থিত ছিলেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) পুলিশ পরিদর্শক মো. বাবুল হোসেন, মো. ফারুক খান, মো. সোলায়মান, মো. আব্দুস সালাম ও মিজানুর রহমান।

ব্রিফিংয়ে এএসপি এহসানুল হক জানান, ২০১৭ সালের ৯ সেপ্টেম্বর রাজাপুর বাইপাস মোড় থেকে মাদক সংক্রান্ত বিরোধের কারণে অপহরণ করা হয় স্থানীয় বাসকাউন্টার বয় খাইরুলকে। তিনি ওই এলাকার আনসার আলীর ছেলে। অপহরণের পর তাকে খুন ও মরদেহ গুম করা হয়েছে এ অভিযোগ এনে রাজাপুর থানায় মামলা করেন খাইরুলের ভাই মো সিরাজুল ইসলাম সিরাজ (মামলা নং ১৫ তারিখ ২৪-৯-২০১৭ ধারা ৩৬৪,৩৬৫, ৩০২, ২০১, ৩৪)।

এতে আসামি করা হয় স্থানীয় সৈয়দ জেহাদুল ইসলাম, রিয়াদ, কাজল, পলি বেগম, রুস্তমসহ অজ্ঞাত ৫/৬ জনকে। এরপর রাজাপুর থানার পুলিশ ফোরকান নামে একজনকে সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে গ্রেফতার করলেও তার কাছ থেকে কোনো ক্লু উদ্ধার করতে পারেনি। পরে ফোরকানআদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে মামলাটি ঝালকাঠি সিআইডিতে বদলি করা হয়।

বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা মো. বাবুল হোসেন দায়িত্ব পেয়ে একাধিক সোর্স নিয়োগ করেন। গত সোমবার (৩ অক্টোবর) সিআইডি পুলিশ রাজাপুর উপজেলার কানুদাসকাঠি গ্রাম থেকে মিজান হাওলাদার মিজু (৪৫) নামে একজনকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পূর্বকানুদাসকাঠি গ্রামের একটি কবরস্থানের বাঁশ ঝাড়ের নিচ থেকে খাইরুলের কঙ্কাল এবং পরনের জিন্সের প্যান্টের অংশ বিশেষ বেল্টসহ কিছু আলামত উদ্ধার করা হয়।

আটক মিজান সিআইডিকে জানান, তার আপন দুই ভাই সোহাগ, মনির এবং ফোরকান ও গিয়াস এই চারজন মিলে খাইরুলকে খুন করে। প্রথমে মরদেহ ফোরকানের বাড়ির পেছনে মাটিতে পুঁতে রাখেন। একমাস পর পূর্বকানুদাসকাঠি গ্রামের একটি কবরস্থানে বাঁশ ঝাড়ের নিচে পুঁতে রাখেন। সে সময় তার ভাই মিজানুর রহমান মিজু ঘটনা দেখে ফেলেন। মিজু নিজের বয়সের চেয়ে বড় একজন নারীকে বিয়ে করায় তার সব ভাই ও আত্মীয়স্বজন ভর্ৎসনা করতো। সে কারণেই ঘটনার ৫ বছর পর তিনি সিআইডির কাছে ঘটনা ফাঁস করে দেন।

মামলার আইও মো. বাবুল হোসেন জানান, সিআইডির হেফাজতে থাকা মিজানুর রহমান মিজুকে বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) আদালতে সোপর্দ করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেওয়া হবে এবং উদ্ধার করা কঙ্কাল ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হবে । তিনি আরও জানান, ঘটনার পর যাদেরকে আসামি করা হয়েছিল তাদের কারও নাম মিজানুর রহমান মিজান বলেনি। এ হত্যাকান্ডের মাস্টার মাইন্ড বা পরিকল্পনাকারী ফোরকানকে ইতোপূর্বে গ্রেফতার করা হলেও পরে সে জামিনে মুক্তি পেয়ে পলাতক আছেন। মাদক সংক্রান্ত বিরোধের কারণে ফোরকানের পরিকল্পনায় খাইরুলকে খুন করা হয়। আর হত্যায় জড়িত গিয়াস উদ্দিন দুলাল এক বছর আগে মারা গেছেন।